জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বেগুন গ্রাম খানকা এ চিশতীয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের বৃহত্তম নবান্ন উৎসব। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই নবান্ন উৎসবে যোগ দিতে দূর-দূরান্ত থেকে আসেন হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজার হাজার নারী-পুরুষ। জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বেগুন গ্রামের মরহুম হযরত শাহ্ সুফি আব্দুল গফুর চিশতী (রঃ) এর খানকা এ চিশতীয়ায় প্রতি বছরের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হয়েছে নবান্ন উৎসব। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে চলে গ্রাম বাংলার এ ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব।কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান চিশতীয়া তরিকাপন্থী আব্দুল খায়ের গোলাম মওলা, পার্শ্ববর্তী কাদিরপুর গ্রামের কামাল পাশা, মাদারপুর গ্রামের লোকমান হোসেন, কুমিল্লা জেলার আবুল কাশেম, পুরান ঢাকার সুলেমান শেখসহ উৎসবে যোগদানকারী অনেক পীর ভক্ত জানান, জয়পুরহাট ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ধর্মীয় এ নবান্ন উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন। শাশ্বত বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসবের সঙ্গে ধর্মীয় সংস্কৃতির সংমিশ্রণে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয় খানকা এ চিশতীয়ার পীর দরবারসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে। হাজারো ভক্তদের দান-দক্ষিণার নতুন ধানের চাল, নারকেল, গুড় আর দুধের তৈরি মধুর স্বাধের মিষ্টি পায়েস, পোলাও, গোস্ত-ভাতসহ সুস্বাধু খাবারের সব আয়োজনই করা হয় এই উৎসবে। পীর ভক্ত ছাড়াও সকল ধর্ম-বর্ণের গরীব-দুঃখী সবাই এই খানকা থেকে না খেয়ে ফিরেন না বলে জানান পীর ভক্ত মুসল্লিরা।ক্ষেতলাল উপজেলার হাটশহর গ্রামের রমজান আলী, ফুলদিঘী গ্রামের রবিউল ইসলামসহ অন্যান্য মুসল্লিরা জানান, নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে আগত অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য চিশতীয়া তরিকার প্রায় সকল মুরিদ শত শত মণ নতুন ধানের চাল, লক্ষ লক্ষ পিস নারিকেল, ৩/৪ ’শ মণ গুড়, ৬০/৭০ মণ চিনি, ২/৩ ’শ লিটার দুধ ছাড়াও কমপক্ষে ১ হাজার মুরগী, ৩০/৪০টি খাসি ছাড়াও লক্ষ লক্ষ টাকা নগদ দান করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ খানকার এক খাদেম জানান, আল্লাহর অসীম রহমতে ও বড় হুজুরের নেক আমলের ফজিলতে শেষ পর্যন্ত পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষকে পেট পুরে খাবার দেয়ার পরও প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা জমা থাকে।রাশেদুজ্জামান/এসএস/এমএস
Advertisement