দেশি-বিদেশি তামাক কোম্পানিগুলো যুবকদের তামাক ব্যবহারে উদ্ধুদ্ধ করতে বিদ্যমান আইন লঙ্ঘন করে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সস্তা তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে, যা সরকারের ২০৪০ সালে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ায় ব্যহত করবে।
Advertisement
কিশোর যুবকদের মাদকের প্রবেশদ্বার তামাক হতে বিরত রাখতে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বাড়াতে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ জরুরি বলে জানানো হয়েছে।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ঢাকা কনফারেন্স অন টোব্যাকো অর হেল্থ ২০২০ সম্মেলনে আগত প্রতিনিধিরা বিভিন্ন গবেষণার আলোকে ঢাকা তামাক নিয়ন্ত্রণ ঘোষণার মাধ্যমে সরকারের কাছে এই দাবি জানান।
সম্মেলনের সারা দেশের ১২০ বেশি সংগঠনের ২৫০ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে, যাতে ২০টি মৌখিক এবং পোস্টারের মাধ্যমে ২৮টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।
Advertisement
সম্মেলনে প্লানারি সেশনে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মো. রুহুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব এবং স্পেশাল ইনভয় অব ক্লাইমেট ভলনারেবল ফোরাম আবুল কালাম আজাদ।
আলোচক ছিলেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ইকবাল মাসুদ এবং বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ।
সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সম্মেলনে আহ্বায়ক কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুসারে সরাসরি ও ভার্চুয়াল অতিথিদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- ব্লুমবার্গ ফিলোনথপিক্স-র জনস্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক কেলি হেনিং, দি ইউনিয়নের তামাক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক গেন কোয়ান, ভাইটাল স্ট্যাটেজিস-র রেবেকা পল, জন্সহপকিন্স ইউনিভার্সিটি ব্লুমবাগ স্কুল অব পাবলিক হেলথের পরিচালক জোয়ানা কোহেন, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব জিল্লুর রহমান চৌধুরী, ডা. হাবিবে মিল্লাত এমপি, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার এমপি, অ্যারোমা দত্ত এমপি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডাসের উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম বকুল। সমাপনী অনুষ্ঠানে নাটাবের প্রেসিডেন্ট মোজাফ্ফর আহমেদ সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম, অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আশিষ পান্ডে, ডেপুটি পরিচালক, দ্য ইউনিয়ন ও কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সম্মেলনের সদস্য সচিব একেএম মাকদুস।
Advertisement
সম্মেলনে আগামী ২০৪০ সালে মধ্যে তামাক ব্যবহার কমিয়ে আনতে ঢাকা তামাক নিয়ন্ত্রণ ঘোষণায় সরকারের কাছে ১৬টি দাবি উপস্থাপন করা হয়, যার মধ্যে তামাক কোম্পানির দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত নীতি প্রণয়ন বা বিদ্যমান নীতিতে যুক্ত করা, খসড়া জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চূড়ান্ত।
খসড়া জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি গ্রহণ, খসড়া জাতীয় তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ নীতি অনুমোদন, কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাক ব্যবহার কমিয়ে আনতে দেশে একটি জাতীয় কর নীতি প্রণয়ন করা, নীতিতে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ বন্ধে আর্টিকেল ৫.৩ অনুসারে প্রণীত খসড়া গাইড লাইন অনুমোদন, টেকসই বা অব্যাহত অর্থায়নের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে ‘হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন’ গঠন করা, তামাক কোম্পানির বেআইনী কার্যক্রম বন্ধে বিদ্যমান আইন অনুসারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অর্গানোগ্রাম চূড়ান্ত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের টোব্যাকো ট্যাক্স সেলকে শক্তিশালী করা, তামাকজাত দ্রব্যের জটিল কর কাঠামো বিলুপ্ত করে, তামাকজাত দ্রব্যের উপর সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করার সুপারিশ করা হয়।
এইচএস/এমআরএম/জিকেএস