সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ মশার ওষুধ না ছিটানোয় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে রাজধানীর মশা পরিস্থিতি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকায় কিউলেক্স মশা বেড়েছে প্রায় চারগুণ। এখনো যদি প্রতিটি ওয়ার্ডে ক্রাশ প্রোগ্রাম নেয়া হয় তাহলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে। তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রকৃতির ওপর ভরসা করা ছাড়া কিছুই করার নেই।
Advertisement
এমন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, পরিস্থিতি উন্নয়নে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন কীটনাশক আনা হবে।
শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ও মশা গবেষক ড. কবিরুল বাশার জাগো নিউজকে বলেন, ‘কয়েক মাস আগেই এমন পরিস্থিতির কথা প্রেডিক্ট (ধারণা) করেছিলাম। ঠিক মতো কীটনাশক ছিটানো হয়নি বিধায় মশা পরিস্থিতি এমন যায়গায় পৌঁছেছে।’
তিনি বলেন, ‘মশার যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে তাতে আসলে আর কিছুই করার নেই। এখন যদি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। বৃষ্টি হয় কিংবা ঝড় হয় তাহলে হয়তো নিয়ন্ত্রণে আসবে। আর যদি ক্রাশ প্রোগ্রাম নেয়া হয় প্রতিটি ওয়ার্ডে। বিশেষ করে ডোবা নালা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয় বা ড্রেনগুলো পরিষ্কার করে পানির ফ্লো চলমান করে দেয়া হয় এবং লার্ভিসাইড ও অ্যাডাল্টিসাইড একযোগে প্রত্যেক ওয়ার্ডে ছিটানো হয় তাহলে হয়তো কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে; কিন্তু পুরোটা নিয়ন্ত্রণে আসবে না। মশার ঘনত্ব অনেক বেড়ে গেছে।’
Advertisement
বৃহস্পতিবার মেয়র তাপস বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যে কীটনাশক প্রয়োগে সুফল পাওয়া গেছে কিউলেক্স মশার জন্য তা কার্যকর হয় না। সেজন্য কীটনাশক পরিবর্তন করছি। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন কীটনাশক চলে আসবে। সেটা আমরা কিউলেক্স মশার জন্য ব্যবহার করব। কিউলেক্স মশার উপদ্রব বাড়ার যে অভিযোগ আসছে, সেটারও নিরসন করা হবে।’
মশার ওষুধ পরিবর্তনে কতটা অবস্থার পরিবর্তন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে কবিরুল বাশার বলেন, ‘কীটনাশক পরিবর্তন করলে মশক পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে, ব্যাপারটা এমন না। কীটনাশক দিয়ে পুরো জায়গা দিয়ে ক্রাশ করতে হবে। মানে যত যায়গায় মশা জন্মায় সবখানে কীটনাশক দিতে হবে। মশা জন্মানো, ডিম পাড়া কিংবা মশার আবাসস্থলে যদি লার্ভিসাইড ও অ্যাডাল্টিসাইড ছিটানো হয় একযোগে তাহলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। সেটা আমাদের এখন যে কীটনাশক আছে সেটা দিয়েও সম্ভব।’
ডেঙ্গু থেকে পরিত্রাণে বৃষ্টির আগে এডিস মশার জন্মানোর স্থান ধ্বংসে অভিযান শুরুর তাগিদ:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের এই শিক্ষক বলেন, এ মুহূর্তে রাজধানীতে এডিস মশার ঘনত্ব কিছুটা কম আছে। সে ক্ষেত্রে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বাসা বাড়ি কিংবা রাস্তা ঘাটে পড়ে থাকা পাত্রে বা পানি জমতে পারে এমন পাত্রগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার অভিযান এপ্রিলে আগেই শুরু করা প্রয়োজন। বৃষ্টির পূর্বে এ ধরনের অভিযান শুরু করতে পারলে চলতি বছর ডেঙ্গু থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকতে পারবে নগরবাসী।’
এসএম/এমআরআর/এএসএম
Advertisement