বরগুনার আমতলী-ঢাকা নৌরুটের নাব্য সংকট কাটাতে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগ আমতলী উপজেলা শহর সংলগ্ন পায়রা নদীতে ড্রেজিং শুরু করেছে। তবে ড্রেজিং মেশিনের খনন করা বালু আবার নদীতেই ফেলা হচ্ছে। এতে ওই রুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলোর চালকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
Advertisement
বরগুনা-ঢাকা নৌরুটের আমতলী লঞ্চঘাট সংলগ্ন পায়রা নদীতে ডুবোচরের কারণে দীর্ঘদিন ধরে নাব্য সংকট ছিল। প্রায়ই এ ডুবোচরে লঞ্চসহ জলযানগুলো আটকে যায়। ফলে এই রুটের যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ রুটে প্রতিদিন একটি করে দোতলা লঞ্চ চলাচল করলেও পটুয়াখালী-বরগুনা সড়কের যানবাহন চলাচলে ফেরি পারাপারও নাব্য সংকটে ভুগছে। এছাড়াও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন মালামাল পরিবহনের কার্গোগুলোও এ রুটে নিয়মিত যাতায়াত করে।
নাব্য সংকট কাটাতে ড্রেজিং বিভাগ প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে এখানে ড্রেজিংয়ের কাজ করছে। একটি ড্রেজার দিয়ে চলছে এ কাজ। তারা লঞ্চঘাট সংলগ্ন পায়রা নদীতে প্রায় ৫০ হাজার ঘনমিটার বালু অপসারণের মাধ্যমে ৩৬০ ফুট দীর্ঘ একটি চ্যানেল তৈরি করবে। যে চ্যানেল দিয়ে লঞ্চ, ফেরিসহ সব ধরনের জলযানগুলো নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে বলে জানান ড্রেজিং বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সোহেল।
Advertisement
তবে ড্রেজিংয়ের খননকৃত বালু পাইপ দিয়ে মাঝ নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে ওই বালু জোয়ার-ভাটার টানে আবার খননকৃত চ্যানেলে ফিরে এসে দ্রুত ভরাটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ নৌরুটে চলাচলকারী সুন্দরবন-৭ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. খোকন জানান, নাব্য সংকটের কারণে এ রুটে লঞ্চ প্রায়ই ডুবোচরে আটকে যায়। কিন্তু ড্রেজিং বিভাগ যেভাবে খনন শুরু করেছে তাতে এর সুফল পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। কারণ নদীর বালু কেটে নদীতেই ফেলা হচ্ছে, এতে ওই বালু দ্রুত খননকৃত চ্যানেল ভরাট করবে।
খননকৃত বালু নদীর বাইরে কোথাও ফেললে ড্রেজিংয়ের সুফল দীর্ঘদিন ভোগ করা যেত জানিয়ে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি দেখা উচিত।
এ ব্যাপারে বরগুনা নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. মামুন জানান, ড্রেজিংয়ের খননকৃত বালু নদীর বাইরে ফেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বালু ফেলার জায়গা পাওয়া যায়নি। এমনকি আমতলী উপজেলা পরিষদও এ ব্যাপারে সহযোগিতা করেনি। তাই বাধ্য হয়েই নদীতে ফেলতে হচ্ছে।
Advertisement
আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকান জানান, নদীবন্দর কর্মকর্তা কিংবা ড্রেজিং বিভাগ থেকে আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কেউ কোনো আলোচনা করেনি। তারা বিষয়টি আমাদের জানালে নদীর বাইরে বালু ফেলার স্থান নির্ধারণের চেষ্টা করতে পারতাম।
ড্রেজিং বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সোহেল জানান, আমরা পাইপ দিয়ে ড্রেজিংয়ের স্থান থেকে নয়শ ফুট দূরে নদীর মাঝে জেগে ওঠা চরে বালু ফেলছি। সেখান থেকে বালু জোয়ার-ভাটার টানে এ চ্যানেল ভরাট করতে পারবে না। ফলে, লঞ্চসহ নৌযানগুলো এর সুফল ভোগ করতে পারবে।
এফএ/এমকেএইচ