শিক্ষা

অনলাইন ক্লাসের সুযোগ বঞ্চিত ৪ জেলার ৫১ শতাংশ শিক্ষার্থী

করোনাকালে কুড়িগ্রাম, রাজশাহী, সাতক্ষীরা ও বরগুনা জেলার প্রায় ৫১ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জেলাগুলোর প্রায় ৫৪ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করছেন- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হলেও তারা নিয়মিত পড়াশোনায় ফিরতে পারবেন না।

Advertisement

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে ‘প্যানডেমিক অ্যান্ড দ্য ইয়ুথ হস বাংলাদেশ’ শীর্ষক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এক ওয়েবিনারে এ তথ্য উপস্থাপন করেন সানেমের রিসার্চ ইকোনমিস্ট মাহতাব উদ্দিন।

জরিপের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, ২০২০ সালের ১৩-২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চার জেলার ১ হাজার ৫৪১টি পরিবারের ওপর জরিপটি পরিচালনা করা হয়। তরুণ জনগোষ্ঠীর ওপর করোনার প্রভাব সম্পর্কে ধারণা পেতে এ জরিপ করা হয়।

Advertisement

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাকালে কুড়িগ্রামে ৬২ শতাংশ, সাতক্ষীরায় ৫৬ শতাংশ, রাজশাহীতে ৩৯ শতাংশ এবং বরগুনায় ৪৬ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের সুযোগ পাননি। গড়ে এই চার জেলার ৫১ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জেলাগুলোতে ৫২ শতাংশ ছাত্র এবং ৬৫ শতাংশ ছাত্রীর কোনো ডিজিটাল ডিভাইস ছিল না। গড়ে ডিভাইসবিহীন ছিলেন ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী।

আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হলে নিয়মিত পড়াশুনায় ফিরবেন না অথবা এ বিষয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন- এমন মত দিয়েছেন চার জেলার ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী। ছেলে শিক্ষার্থীর মধ্যে এই হার ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং মেয়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। গ্রামে এই হার ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং শহরে ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

এদিকে ২০১৯ সালের নভেম্বরের তুলনায় ২০২০ সালের নভেম্বরে জরিপকৃত চার জেলায় মজুরি বা বেতনভুক্ত কর্মচারী বা কর্মকর্তাদের মধ্যে ৬৯ দশমিক ৭৬ শতাংশের আয় কমেছে। ২৮ শতাংশের আয় অপরিবর্তিত রয়েছে এবং ২ শতাংশের আয় বেড়েছে। আর পেশা পরিবর্তন করেছেন ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ শ্রমিক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশার সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।

Advertisement

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ আমাদের কাঠামোগত দুর্বলতার বিষয়টি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। সার্ভে ডিজিটাল আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে কাঠামোগত দূর্বলতার বিষয়টি। সার্ভে-তে বৈষম্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সরকার ডিজিটালাইজেশনে কাজ করলেও তা জেন্ডার রেসপনসিভ ছিল না। এই তথ্যগুলো নিয়ে আমাদের অনেক কাজ করার সুযোগ আছে।

ওয়েবিনারে আলোচক ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব দিলরুবা শারমীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সানজিদা আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ প্রমুখ।

এসএম/ এএএইচ/এএসএম