লকডাউন শিথিলে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। দেশটিতে চলমান তৃতীয় দফার লকডাউন কীভাবে শিথিল করা হবে, সে বিষয়ে গতকাল সোমবার তিনি পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখেন।
Advertisement
বরিস জনসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে মোট চার ধাপে লকডাউন শিথিল করা হবে। এর ফলে আগামী জুনের মধ্যে দেশটির জনজীবন স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
যুক্তরাজ্যে লকডাউন শিথিলের ক্ষেত্রে একটি ‘ধীর ও সতর্ক’ পদ্ধতির রূপরেখার কথা বলেছেন বরিস জনসন। যে প্রক্রিয়ায় ও যে চার ধাপে যুক্তরাজ্যে লকডাউন শিথিল করা হবে সেগুলো হলো- আগামী ৮ মার্চ যুক্তরাজ্যের বিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হবে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ৩০ জন ও বিয়ের অনুষ্ঠানে ৬ জনের বেশি উপস্থিত না থাকার বাধ্যবাধকতা বহাল থাকছে। এই সময়ে অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক কোনো হলিডে প্ল্যান করা যাবে না। সবার জন্য বাড়িতে থাকার নির্দেশনা আগের মতই কার্যকর রয়েছে।
আগামী ২৯ মার্চ থেকে প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে। তবে দেশ বা দেশের বাইরে ভ্রমণের পরিকল্পনা করা যাবে না। ছয়জন বা দুটি পরিবার একসঙ্গে মিলিত হতে পারবে। শিশু-কিশোরদের জন্য বাইরে খেলাধুলার ব্যবস্থা করা যাবে, তবে সেটা ১৫ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
Advertisement
লকডাউন শিথিলের দ্বিতীয় ধাপ আগামী ১২ এপ্রিলের আগে শুরু হবে না। এ সময়ের পর দেশের মধ্যে ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হলেও আন্তর্জাতিক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
তৃতীয় ধাপের নির্দেশনা আসবে ১৭ মে’র পর। এই ধাপে হসপিটালিটি বা রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া-দাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে, যাওয়া যাবে পানশালায়। সামাজিকভাবে ৩০ জনের বেশি এক জায়গায় জড়ো হওয়া যাবে না। পরিস্থিতি বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ শিথিল করা হবে।
চতুর্থ ধাপে আগামী ২১ জুনের পর সামাজিক দূরত্বের আইনি বাধ্যবাধকতা তুলে দেয়া হবে। তবে ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, এ সময়ের মথ্যে যদি আবার করোনারভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ে তাহলে লকডাউন শিথিলের সব তারিখ পিছিয়ে দেয়া হবে।
এদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও ফাইজার বায়োটেকের টিকা দুটি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে শক্তিশালী কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছেন বরিস জনসন। তিনি বলেন, টিকা দুটি ব্যবহারের ফলে গত পাঁচ সপ্তাহে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা কমেছে, এক্ষেত্রে ফাইজারের টিকার ভূমিকা ৮৫ শতাংশ আর অক্সফোর্ডের উদ্ভাবিত টিকার ভূমিকা ৯৪ শতাংশ।
Advertisement
এছাড়া যুক্তরাজ্য যেহেতু চলতি মাসেই টিকা প্রদানের প্রত্যাশিত ২০ মিলিয়নের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যাবে, তাই লকডাউন শিথিল করার রোডম্যাপ জরুরি বলেই মনে করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
এমএসএইচ/জেআইএম