বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মালয়েশিয়া প্রবাসীর ছেলে তাওহীদ সরকারকে (৫) ঘরের ভেতর বঁটি দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছে তার বড় ভাই সজিব সরকার (৭)। ধারালো অস্ত্র দিয়ে ‘জবাই জবাই’ খেলতে গিয়ে সে বঁটি দিয়ে ছোট ভাইকে গলা কেটে হত্যা করে। এসময় ওই বাড়িতে দুই ভাই ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না।
Advertisement
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলের দিকে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা ধুনট থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহত তাওহীদ উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের আব্দুল গফুর সরকারের ছেলে।
পুলিশ সুপার জানান, জীবিকার তাগিদে আব্দুল গফুর সরকার প্রায় আড়াই বছর ধরে মালয়েশিয়ায়। তাওহীদ বাড়িতে তার মা ও দাদা-দাদির সঙ্গে থাকত। শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে মা দুলালী খাতুন দুই ছেলে সজিব ও তাওহীদকে বাড়িতে রেখে শাশুড়ি গোলাপী খাতুনের সঙ্গে বাড়ির পাশে ভুট্টাক্ষেতে গরুর জন্য ঘাস আনতে যান। এসময় সজিব ও তাওহীদ বাড়িতে জবাই জবাই খেলছিল। খেলার একপর্যায়ে সজিব ধারালো বঁটি দিয়ে তাওহীদের গলা কেটে ফেলে।
Advertisement
কিছুক্ষণ পর ঘাস নিয়ে দুলালী খাতুন বাড়ি ফিরে ঘরের ভেতরে ঢুকে দেখেন মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে তার ছেলে তাওহীদ, তার গলা কাটা। এসময় তার চিৎকার শুনে দেবর সোলাইমান আলী ঘটনাস্থল থেকে তাওহীদকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখানেই তাওহীদ মারা যায়।
থানা পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শুক্রবার রাতেই নিহত শিশুর মা, সৎবোন ও চাচাসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। আটকরা হলেন- নিহত তাওহীদের মা দুলালী খাতুন (২৮), সৎবোন সুরভী খাতুন (১৪), চাচা সোলায়মান আলী (৪০) ও প্রতিবেশী গোলাম হোসেন (৩৫)। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সজিব জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে সজিবকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে নির্ভয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রকাশ করে। এসময় ধুনট উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (প্রবেশন কর্মকর্তা) আব্দুল্লাহ আল কাফির উপস্থিতিতে সজিবের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা বলেন, ‘আইন অনুযায়ী ৮ বছরের কম বয়সী শিশুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। এ কারণে সজিবকে প্রবেশন কর্মকর্তার (সমাজসেবা কর্মকর্তা) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
ধুনট উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল কাফি বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে সজিব সরকারকে তার মায়ের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।
Advertisement
এসআর/এএসএম