দেশজুড়ে

ঠাকুরগাঁওয়ে জমে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ শীতবস্ত্রের দোকান

হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থান করায় শীতে ঢাকা পড়তে শুরু করেছে ঠাকুরগাঁও শহর। ঠাণ্ডায় জেলায় গত কয়েকদিন ধরে শীত পড়তে শুরু করায় জমে উঠেছে ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ শীত পোশাক ব্যবসা। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এসব স্থানে বিভিন্ন মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।দিনভর রোদ আর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই হালকা ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাব। এর মধ্যেই ঠাকুরগাঁওয়ে গরম কাপড়ের জন্য স্বচ্ছল ক্রেতারা যেমন দোকানে যাচ্ছেন, তেমনি স্বল্প আয়ের মানুষেরাও ভিড় করছেন পুরনো শীতবস্ত্রের বাজারে। ক্রমেই ঠাকুরগাঁওয়ে জমে উঠছে পুরোনো শীতবস্ত্রের বাজার।সরজেমিন দেখা যায়, শহরের প্রাণকেন্দ্র বড়মাঠ ও ঠাকুরগাঁও রোড যুব সংসদ মাঠে, পৌর হকার্স মার্কেটে, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ও গ্রামের বিভিন্ন হাট বাজারে বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাতের ওপর ও ভ্যান গাড়িতে করে বাহারি রঙের এসব শীতবস্ত্র বিক্রি করতে। গরীবদের পাশাপাশি অনেক উচ্চবিত্ত পোশাক কিনছেন এসব দোকান থেকে। ‘খুঁইজা লন, বাইছা লন, খালি ৩০ টাকা, খালি ৩০ টাকায় ঠাকুরগাঁও শহরের বালক উচ্চবিদ্যালয়ের বড় মাঠে দোকানিদের এমন হাঁকডাক শোনা যাচ্ছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সড়কের হকার্স মার্কেট, আদালত চত্বর ও পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা সাজিয়ে বসেছেন পুরোনো গরম কাপড়ের পসরা।কয়েকজন দোকানি বলেন, কয়েক দিন ধরেই শহরের প্রায় সব দোকানে কম-বেশি শীতের কাপড় কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। ক্রেতাদের চাহিদার কথা ভেবে ছোট-বড়দের জ্যাকেট, মাফলার, সোয়েটার, হাত মোজা, কোট, টুপি সবই মিলছে এসব দোকানে।ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন গ্রামের শ্রীমতি তিন মাসের নাতির গরম কাপড় কিনতে এসেছেন শহরের বড় মাঠে। এ দোকান ও দোকান ঘুরে অবশেষে ৪৫ টাকায় দুটি পুরোনো পায়জামা এবং ১শ টাকায় তিনটি ফুলহাতা পুরোনো গেঞ্জি কিনলেন। তিনি বলেন, শীতের সঙ্গে সঙ্গে গরম কাপড়ের দামও বেড়ে যায়। তাই আগেভাগেই গরম কাপড় কিনতে এখানে আসা।ভ্রাম্যমাণ শীতবস্ত্র ব্যবসায়ী রাসেল আহম্মেদ জাগো নিউজকে জানান, প্রতি বছরই নতুন নতুন সাজে পোশাকের উপর পোশাক সাজিয়ে এভাবে তারা শীতের পোশাক বিক্রি করে আসছেন। বিকেল হলেই এসব অস্থায়ী দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। গভীর রাত পর্যন্ত তাদের বেচাকেনা চলে।আর এসব পোশাক কিনতে নিম্ন আয়ের লোকজনই বেশি আসেন বলে ব্যবসায়ীরা জানান। ব্যবসায়ীরা আরও জানান, সাধারণত বিভিন্ন গার্মেন্টসের এক্সপোর্টের পুরোনো ও পরিত্যক্ত এসব পোশাক তারা ঢাকা থেকে গাট হিসেবে কিনে আনেন। তবে এসব পোশাকের মধ্যে অনেক সময় খুবই ভালোমানের পোশাক পাওয়া যায়। তাই অনেক উচ্চবিত্তও এখান থেকে পোশাক কিনতে আসেন বলে জানান তারা। বড়মাঠ এলাকার ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী মনির হোসেন জাগো নিউজকে জানান, এ বছর প্রথম থেকেই শীত শুরু হওয়ায় বেচা-বিক্রি অনেক ভালো। তার এখানে ১শ টাকা থেকে ৫শ টাকার মধ্যে শীতবস্ত্র পাওয়া যায়। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত  সাড়ে চার হাজার টাকার শীতের পোশাক বিক্রি হয়েছে বলে তিনি জানান।এছাড়া ভ্যানগাড়িতে করে বিভিন্ন হাট বাজার ও শীতের পোশাক বিক্রি করা হচ্ছে। যুব সংসদ রোড এলাকায় শীতের পোশাক কিনতে আসা রিকশাচালক হামিদ আলী জাগো নিউজকে বলেন, অল্প দামে হামরা প্রতি বছর এইঠে থেকে শীতের পোশাক কিনি। শুধু নিজের জন্য নয়, দরিদ্র এসব মানুষ পরিবার ও পরিজনদের জন্যও এখান থেকে শীতের পোশাক কিনতে দেখা যায়।রবিউল এহসান রিপন/এমজেড/এমএস

Advertisement