মতামত

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সচল করুন

নিত্য-নতুন প্রযুক্তি মানুষকে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন করে। কখনো তা হয় আনন্দের কখনো বিড়ম্বনার। আবার কে কোন উদ্দেশ্যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছে এর ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু। একটি ছুরি ডাক্তারের হাতে থাকলে তা জীবন বাঁচানোর জন্য ব্যবহৃত হয় আর দুর্বৃত্তের হাতে পড়লে তা হয়ে ওঠে প্রাণঘাতী। এই রকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে যে সরকার দেশ শাসন করছে সেই সরকার দেশে  ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগের সব মাধ্যমই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। গত বুধবার দুপুর ১২টায় সরকারের নির্দেশে এসব মাধ্যম বন্ধ করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এ সময় পুরো দেশে প্রায় দেড় ঘন্টার জন্য ইন্টারনেট বন্ধ ছিল।সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থেই সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যমগুলো সাময়িবভাবে বন্ধ করা হয়েছে। বৃহত্তর স্বার্থে এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে না পারার সাময়িক কষ্টটুকু জনগণকে মেনে নেওয়ার অনুরোধ  জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। নিরাপত্তাজনিত কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বন্ধের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে বিটিআরসির চেয়ারম্যান গণমাধ্যমকে জানান।বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ রাখা কতোটা যুক্তিসঙ্গত এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে, মাথা ব্যথা হলে  তা কেটে ফেলা কোনো সমাধান নয়। অপরাধীরা এগুলো ব্যবহার করে বলেই তা বন্ধ করে দিতে হবে-এটা কোনো যুক্তি হতে পারে না। কারণ অপরাধীর যোগাযোগের হাজারটা পথ খোলা আছে। এরফলে দুর্ভোগে পড়বে আসলে সাধারণ মানুষ। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সবকিছুই এখন ইন্টারনেট নির্ভর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লোকজন সহজেই যোগাযোগ করতে পারে। ফলে সবার কাছেই এটি জনপ্রিয় এক মাধ্যম। এছাড়া অপরাধীরা প্রযুক্তি ব্যবহারে যতোটা দক্ষ অপরাধ দমন বাহিনীকেও তার চেয়ে দক্ষ করে তোলাটাই হবে প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ দমনের কার্যকর উপায়। সেদিকে নজর দেয়াটাই এখন সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। কোনো কিছু বন্ধ করে দেয়ার শর্টকাট রাস্তায় আসলে সমাধান নেই। তাৎক্ষণিক ফল পাওয়া গেলেও দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার কোনো বিকল্প নেই। জনদুর্ভোগ লাঘবে যত দ্রুত সম্ভব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো সচল করাই এখন সময়ের দাবি।এইচআর/এমএস

Advertisement