ফিচার

সাড়ে ৩ হাজার বছর পর জানা গেল রাজার মৃত্যুরহস্য!

শরীরে অসংখ্য আঘাত সহ্য করে অবশেষে মৃত্যুবরণ করেন ফেরাউন সেকেনেনার তাও। ১৫৬০-১৫৫৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দের ১৭তম রাজা ছিলেন তিনি।

Advertisement

দক্ষিণ মিশরের থেবান অঞ্চল শাসন করেছিলেন। এ শাসক রহস্যজনকভাবে মারা যান। সম্প্রতি এ রাজার মমি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গবেষকরা তার মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করেছেন।

এ ফেরাউন ফিলিস্তিনি রাজবংশের হিক্সোসদের (নিম্ন এবং মধ্য মিশর শাসন করতেন যেসব রাজা) সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তখনই শত্রুপক্ষের আক্রমণে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

৩ হাজার ৫৭৬ বছর আগে রাজ্য শাসন করতেন ফেরাউন তাও। ধারণা করা হয়, হিক্সোসদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পরই তিনি জীবনের শেষ পরিণতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। সে হিসেবে এ মমির বয়স সাড়ে ৩ হাজার বছরেরও বেশি।

Advertisement

গবেষকরা তাওয়ের মৃত্যু নিয়ে আরও একটি তত্ত্বকে সামনে রেখেছেন, হিক্সোসরা হয়তো রাজা তাওকে ষড়যন্ত্র করে ঘুমের মধ্যে হত্যা করেছিল।

সম্প্রতি ফেরাউন তাওয়ের নষ্ট হয়ে যাওয়া মমির সিটি স্ক্যান থেকে জানা যায়, তিনি মাথায় গভীর আঘাত পেয়েছিলেন। গবেষকরা জানান, তার হাত দু’টি পিঠের পেছনে বেঁধে কমপক্ষে ৫ জন আক্রমণকারী নির্মমভাবে তাকে হত্যা করেছিল।

মিশরীয় কিংবদন্তিতে বলা হয়, হিক্সোস নেমেসিস অ্যাফোফিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ফেরাউন তাও মারা যান। যদিও তাও ফেরাউনের আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি।

কারণ তার পুত্র আহমোস পিতার হত্যাকারীদের কাছ থেকে এভারিস (নীল নদ সংলগ্ন ব-দ্বীপ) শহর দখল করতে সক্ষম হয়েছিলেন। পিতার পরে আহমোস ১৮-১৯ বছর রাজ্য শাসন করেন।

Advertisement

তাওয়ের মমিটি প্রত্নতাত্ত্বিকরা আবিষ্কার করেছিলেন ১৮৮১ দেইর-আল-বাহরি সমাধি কমপ্লেক্স থেকে। ১৯৬০ সালের শেষের দিকে ভিজ্যুয়াল ইন্সপেকশন এবং এক্স-রে পরীক্ষা করা হয় ফেরাউন তাওয়ের মমির। তবে তার মৃত্যুরহস্য তখনো জানা যায়নি। ফেরাউনের মাথায় অনেকগুলো গুরুতর আঘাত খুঁজে পান গবেষকরা।

এ ছাড়াও তখন জানা যায়, ফেরাউন তাওকে অতি দ্রুত মমি করে রাজকীয়ভাবে সমাধি দেওয়া হয়েছিল। এ কারণে তার মমি অনেক জায়গা থেকেই নষ্ট হয়ে যায়।

গবেষকদের মতে, কায়রোর মিশরীয় জাদুঘরে রাখা অন্যান্য মমির মধ্যে ফেরাউন তাওয়ের মমিটিই সবচেয়ে খারাপভাবে সংরক্ষিত আছে।

১৯৬০ সালে তাওয়ের ফরেনসিক পরীক্ষা করেন প্রত্নতত্ত্ববিদ জেমস হ্যারিস এবং কেন্ট উইকস। তারা বলেন, ‘যখন তার শরীর খোলা হয়; তখন শরীর থেকে খুবই বাজে গন্ধ বের হয়েছিল।’

এমন গন্ধ হওয়ার কারণ হলো দ্রুত মমি করা হয়েছিল তাওয়ের মৃতদেহ। জানা যায়, ৭০ দিন ধরে মিশরীয়রা পরিপূর্ণ মমিতে রূপান্তর করতেন মৃতদেহ। হয়তো এরও কম সময়ের মধ্যেই তাওয়ের মমিটি সম্পন্ন হয়। এ কারণেই হয়তো তার মমি এখন ভঙুর প্রায়।

ডেইলি মেইল/জেএমএস/এসইউ/এমএস