ক্যাম্পাস

নম্বর কম দেয়ায় শিক্ষিকাকে অব্যাহতি

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৌটুসি রায়কে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

Advertisement

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষার্থীদের নম্বর কম দেয়া এবং উল্টো শিক্ষার্থীদের নামে থানায় জিডি করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।

অফিস আদেশে বলা হয়, শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়াারি) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি-নির্ধারণী ফোরামের (সিন্ডিকেট) ৭৬তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ওই শিক্ষক বিভাগের প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, পরীক্ষার ফল প্রকাশ, নিরীক্ষণ, পরীক্ষার হল প্রদর্শন ও মৌখিক পরীক্ষা নেয়াসহ পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনো কাজে যোগ দিতে পারবেন না।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৮ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের (২০১৪-১৫ সেশন) দ্বিতীয় সেমিস্টারের ৪০২নং কোর্সের ‘ট্রান্সলেনস স্টাডিজ’ বিষয়ের ৫০ নম্বরের সেশনাল ফলাফল প্রকাশ হয়। ফল প্রকাশের পর ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা কোর্স শিক্ষক মোটুসি রায়ের বিরুদ্ধে কম নম্বর দেয়ার অভিযোগ তুলে তার মোবাইল ফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে গণআত্মহত্যা ও আন্দোলনের হুমকি দেন।

Advertisement

শিক্ষার্থীদের গণআত্মহত্যার হুমকির পর সেদিন মধ্যরাতে নিরাপত্তা চেয়ে তাজহাট থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন ওই শিক্ষিকা। নম্বর কম দেয়া ও জিডির প্রেক্ষিতে পরদিন শিক্ষার্থীরা বিভাগের সামনে বিক্ষোভ করেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোলাম রাব্বানীকে আহ্বায়ক, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশিদ এবং রসায়ন বিভাগের প্রধান তানিয়া তোফাজকে সদস্য করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে একাডেমিক কাউন্সিল। তদন্ত কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে মৌটুসি রায়কে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন করার সুযোগ চেয়ে করা আবেদেনের বিষয়টিও সুপারিশে উঠে আসে।

চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মৌটুসি রায় বলেন, ‘মোবাইল ফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে আত্মহত্যা ও আন্দোলনের হুমকি দেয়ার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে পরামর্শ করে বিভাগের দুই শিক্ষক আলী রায়হান সরকার, কাশফিয়া ইয়াসমীন অন্বা এবং উপাচার্যের পিএ আবুল কালাম আজাদকে সঙ্গে নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়রি করি’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগগুলো প্রমাণিত কিনা চিঠিতে এমন কোনো কথা উল্লেখ নেই। কিসের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো? তদন্ত কমিটি কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে? এমনকি তদন্ত কমিটির কোনো চিঠিও আমি পাইনি। কেবল আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। এর বাইরে আর কিছুই না’।

Advertisement

এসএমএম/এএসএম