রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ সংলগ্ন সুদৃশ্য লেকটি পানিশূন্য পাথুরে মরুদ্যানে পরিণত হয়েছে! সপ্তাহখানেক আগেও লেকের টলটলে পানিতে ঝাঁকে ঝাঁকে তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য চোখে পড়লেও এখন লেকজুড়ে শুধু পাথর আর পাথর। এ যেন সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ের আরেক রূপ।
Advertisement
উদ্যানের কিছু স্থানে এখনো স্বল্প পরিমাণ পানি জমে রয়েছে। সেখানে দলবেঁধে মাছ শিকার করতে নেমেছে ছোট শিশু ও তরুণের দল। বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন পরিদর্শনকালে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস। এ বছর স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী উপলক্ষে গোটা উদ্যানে সংস্কারকাজ চলছে। লেকের পানি ময়লা হওয়ায় সংস্কারকাজের অংশ হিসেবে পানি অপসারণ করা হয়েছে। পানি অপসারণ শুরু হওয়ার পর থেকে লেকে মাছ শিকারের উৎসব শুরু হয়। গত দুদিনে প্রচুর পরিমাণ মাছ শিকার করা হয়েছে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে শুকনো লেকে মাছ শিকাররত কয়েকজন তরুণ জানান, গত দুদিনে কয়েক মণ মাছ ধরা হয়েছে। বেশিরভাগ মাছ উদ্যানের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার বাহিনীর সদস্যরা নিয়ে গেছেন।
Advertisement
সালাম নামের এক তরুণ জানান, গত দুদিনে তিনি আট কেজি তেলাপিয়া মাছ ধরেছেন।
ফারুক নামের এক তরুণ জানান, তিনি গুলিস্তানের একজন হকার। পরিচিত একজনের মাধ্যমে তিনি গতকাল শুনতে পান উদ্যানের লেকে মাছ শিকার করা যাচ্ছে। এ খবর শুনে তিনি এখানে এসে দেখেন এলাহি কারবার। সবাই গোড়ালি সমান পানি হাতড়ে মাছ ধরছেন। গতকাল তিনি দর্শক হিসেবে দেখলেও আজ নিজেই মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দু-তিন কেজি মাছ পেয়ে যান।
সাত্তার নামে এক শিশু জানায়, আজ আর বড় কোনো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। পানি কমে যাওয়ায় পাথরের ফাঁকে মাছ লুকিয়ে থাকছে। সাত্তারকে পাথর নিয়ে পানিতে ছুড়ে মাছ শিকারের চেষ্টা করতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিরাপত্তারক্ষী আনসার সদস্যরা জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই লেকের পানি অপসারণ করা হয়েছে। লেকের ময়লা পানির কারণে পাথর ও দেয়ালে শ্যাওলা জমেছে। তাই পানি ছেড়ে দিয়ে আবার সংস্কারকাজের পর লেকে নতুন পানি ছাড়া হবে।
Advertisement
এমইউ/এমআরআর/এমকেএইচ