দেশজুড়ে

ধর্ষণ অভিযোগ তদন্তে গিয়ে মীমাংসার সময় বেঁধে দিল পুলিশ

ময়মনসিংহের নান্দাইলে মনির মিয়া (১৯) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণের অভিযোগ তদন্ত করতে যান পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তারা। এ সময় তারা ঘটনাটি মীমাংসার জন্য ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন বলে জানায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবার।

Advertisement

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনিরুল ইসলাম ও এএসআই নুর আহম্মেদ ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে কিশোরীর কথা ছাড়াও স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য শোনেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার নবম শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রী প্রাইভেট পড়তে যাওয়া আসার সময় প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন মনির মিয়া। এ ঘটনায় মনিরের অভিভাবকের কাছে বিচার দিলেও কোনো কাজ হয়নি। এর মাঝে গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে কিশোরী তার বাবাকে পাশের বাড়ি থেকে ডেকে আনতে গেলে মনির তার পথরোধ করে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেন।

ধর্ষণের পর মনির চলে যেতে চাইলে তাকে জাপটে ধরে কিশোরী চিৎকার দেয়। আশপাশের লোকজন ছুটে এলে মনির দৌড়ে পালিয়ে যান। পরদিন ১১ জানুয়ারি ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় সালিশকারীরা ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ঘটনার পাঁচদিন পার হলেও ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেন।

Advertisement

ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, পুলিশ এসে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। তদন্ত শেষে পুলিশ মোবাইল করে ঘটনাটি কাউকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মীমাংসা জন্য বলছেন।

মোবাইলে কাকে মীমাংসার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে মীমাংসা করার জন্য বলেনি। মোবাইলে হয়তো ওসি সাহেবকে না হলে চেয়ারম্যান সাহেবকে মীমাংসার জন্য বলছে।

এ বিষয়ে জানতে গাঙাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আশরাফুজ্জামান খোকনের নম্বরে ফোন করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মীমাংসার জন্য সময় বেঁধে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই নুর আহম্মেদ বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করে ধর্ষণের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলা নেয়া হবে।

Advertisement

নান্দাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, সময় বেঁধে দেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ঘটনায় মামলা নেয়ার জন্য ওই কিশোরীর পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শাহজাহান মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একই সঙ্গে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর নাম-ঠিকানা মোবাইলে এসএমএস করে দেয়ার কথাও বলেন তিনি।

মঞ্জুরুল ইসলাম/এসজে