করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বন্ধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে শিক্ষার্থী থাকা নিষিদ্ধ। ফলে অন্যান্য বারের মতো এবার ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দের সঙ্গে সরস্বতী পূজা পালন হয়নি ক্যাম্পাসে।
Advertisement
গতবার যেখানে পুরো জগন্নাথ হলের মাঠে সবার অংশগ্রহণে ৮০টির মতো মণ্ডপে পূজা হয়েছিল, এবার সেখানে মাত্র একটি মণ্ডপের মাধ্যমে পূজা পালন করা হয়।
মণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, পলাশ, বেলপাতা, হরতকি, যজ্ঞের জন্য পাটকাঠি, মধু, ঘি, সাদা ফুল, টগর, গাঁদা ফুলসহ নানা জাতের ফুলে সেজেছে মণ্ডপ। মণ্ডপে এক থেকে দুই ঘণ্টা পূজা শেষে শিক্ষার্থীরা অঞ্জলি নিচ্ছেন। পাশাপাশি নিয়েছেন বড়রাও। পূজা শেষে চন্দ্রমিত্ত, যজ্ঞের ফোঁটা ও প্রসাদ হিসেবে ফলমূল ও খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও চলছে পূজা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, অন্যান্য বার বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের খেলার মাঠে বিভাগভিত্তিক পূজামণ্ডপ তৈরি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগই একটি করে মণ্ডপ তৈরি করত। এবার খুব সীমিতভাবে পালন হচ্ছে। তারপরও মনে হচ্ছে দুর্গাপূজা থেকে অনেক স্বস্তিতে এই পূজা পালন করতে পেরেছি। এছাড়া যেখানে অন্যান্য বছর ৮০টির মতো মণ্ডপ থাকত সেখানে এবার মাত্র একটি। ফলে স্বভাবতই আমাদের মনে খানিকটা রেখাপাত হচ্ছে।
Advertisement
জগন্নাথ হল সংসদের ভিপি উৎপল বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, এবার ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় ও করোনাভাইরাসের কারণে বড় ধরনের কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়নি। গত বছরও আমরা অনেক আনন্দ উদ্দীপনায় পূজা উদযাপন করেছি। এ বছর করোনার কারণে আনন্দ ফিকে হয়ে গেছে। সামনের বছর থেকে নতুন উদ্যমে গতবারের চেয়ে বেশি জমকালোভাবে পূজা উদযাপন করতে পারব বলে আশাবাদী আমরা।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা জাগো নিউজকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আমরা গতবারের মতো বিশাল আয়োজনে পূজা উদযাপন করতে পারিনি। এবার একেবারে সীমিত পরিসরে কেন্দ্রীয়ভাবে পূজা পালন করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা হলে নেই। তারপরও দূর-দূরান্ত থেকে অনেক শিক্ষার্থী পূজায় অংশ নিতে এসেছেন। আমরাও জানতাম না এই বন্ধ ক্যাম্পাসে এত উৎসাহের সঙ্গে মানুষ আসবে। এখন মনে হচ্ছে, আমাদের আরও বড় আকারে পূজা আয়োজন করা দরকার ছিল। সামনের বছর পুরোনো আমেজে আবারও পূজা উদযাপন করতে পারব বলে আশা করি।
পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, হিন্দু শাস্ত্রমতে বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী সরস্বতী আশীর্বাদ প্রদানের জন্য প্রতি বছর এই দিনে আবির্ভূত হন। দেবীর এই সর্বজনীন আশীর্বাদ সবাইকে উদার ও মানবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এআরএ/এএসএম
Advertisement