দুর্নীতি মামলায় পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিচারিক (নিম্ন) আদালতের দেয়া জামিন কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
Advertisement
সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দীন শামিমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে আজ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি। তবে আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
পরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের জানান, দুদকের এ মামলায় আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করার পর হাইকোর্ট তাদের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুসারে আত্মসমর্পণের পর তাদের ২৭ ডিসেম্বর জামিন দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ। ওই জামিনাদেশ বাতিল চেয়ে গত বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। ওই আবেদন শুনানি নিয়ে আদালত তাদের জামিন বাতিল প্রশ্নে ১০ দিনের রুল জারি করেছেন।
Advertisement
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় পাপুলের স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে গত ১১ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেন ঢাকার একটি বিচারিক আদালত। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন সেলিনা ও ওয়াফা।
এ জামিনের আদেশ বাতিল চেয়ে আবেদন করে দুদক। আজ আদালতে দুদকের আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
এর আগে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদেরকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তারও আগে ১০ ডিসেম্বর অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী ও মেয়েকে ১০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের পর তারা নিম্ন আদালতে যান। কিন্তু আদালত ছুটি থাকায় বিষয়টি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। পরবর্তীতে তারিখ পিছিয়ে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদেরকে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন হাইকোর্ট।
Advertisement
এদিকে ১০ ডিসেম্বর কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী ও মেয়ের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ প্রতীয়মান হয়নি মর্মে প্রতিবেদন দেয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক মো. আরেফিন আহসান মিঞাকেও তলব করেন আদালত।
গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি কাজী শহীদুল ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচারসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত উপায়ে শত শত কোটি টাকা অর্জন করে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
পরে একই বছরের ১১ নভেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার অর্থ পাচারের অভিযোগে শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- পাপুল, তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও সেলিনার বোন জেসমিন প্রধান।
অর্থ ও মানবপাচারের অপরাধে চার বছরের কারাদণ্ড পেয়ে কুয়েতে কারাগারে আছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুল।
এফএইচ/এমএইচআর/এআরএ/জেআইএম/এমএস