খেলাধুলা

তাইজুল-লিটনে দারুণ রসায়ন, গেল ৬ষ্ঠ উইকেট

আবু জায়েদ রাহীর দেখানো পথেই হাঁটলেন তাইজুল ইসলাম। বল হাতে নিয়ে দিনের শুরুটা করেছিলেন আবু জায়েদ রাহী আর স্পিনার তাইজুল ইসলাম। শুরুতেই পরপর দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে দারুণভাবে খেলায় ফিরিয়ে এনেছিলেন পেসার রাহী। কিন্তু অন্যপাশে তাইজুল ইসলাম মোটেই সুবিধা করতে পারছিলেন না।

Advertisement

অবশেষে চতুর্থ দিনে (আজ) নিজের করা ৭ম ওভারে দারুণ এক সাফল্যের দেখা পেয়ে গেলেন তাইজুল ইসলাম। এর মধ্যে তার যেমন নিজের কৃতিত্ব ছিল, তেমনি এই কৃতিত্বে দারুণ সহযোগিতা ছিল উইকেটরক্ষক লিটন দাসের। তার ক্ষিপ্রতার কাছেই মূলতঃ হেরে যান জার্মেইন ব্ল্যাকউড এবং উইকেট জমা হলো তাইজুলের অ্যাকাউন্টে।

ইনিংসের ৩৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলটি খেলতে গিয়ে মিস করেন ব্ল্যাকউইড। চোখের পলকে বল ধরেই স্ট্যাম্প ভেঙে দেন লিটন। আউটের আবেদন করতেই নন-স্ট্রাইক আম্পায়ার টিভি আম্পারকে কল করেন। রিপ্লেটে দেখা গেলো পরিস্কার স্ট্যাম্পিং হয়ে গেলেন ব্ল্যাকউড। ৯ রান করে ফিরে যান তিনি।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৩৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৭৯ রান। তাদের লিড এখন ১৯২ রানের। ২৬ রান নিয়ে বোনার এবং ৫ রান নিয়ে ব্যাট করছেন জশুয়া ডা সিলভা।

Advertisement

দিনের শুরুটা ঠিক যেমন চেয়েছিল বাংলাদেশ, তেমনটাই এনে দিলেন দলের একমাত্র পেসার আবু জায়েদ রাহী। চতুর্থ দিনের এক ঘণ্টা হওয়ার আগেই রাহীর হাত ধরে জোড়া সাফল্য পেল বাংলাদেশ। দলীয় সংগ্রহটা ৬০ পেরুতেই নিজেদের অর্ধেক উইকেট হারিয়ে ফেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

প্রথম ইনিংসে পাওয়া ১১৩ রানের লিড ম্যাচে বেশ এগিয়েই রেখেছিল ক্যারিবীয়দের। তবে কামব্যাকের আশা জাগিয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের লিডটা আড়াইশর মধ্যে রাখার লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং করছে টাইগাররা।

আগেরদিন ৩ উইকেট তুলে নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসের ভালো শুরু করেছিল বাংলাদেশ। স্বাগতিকরা ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে চতুর্থ দিন সকালেও। আজ (রোববার) দিনের পঞ্চম ওভারেই প্রথম উইকেটের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা জোমেল ওয়ারিকানকে সাজঘরে পাঠিয়ে দিনের শুরুটা ইতিবাচকভাবেই করল বাংলাদেশ।

ডানহাতি পেসার আবু জায়েদ রাহীর হাত ধরে মিলেছে সাফল্য। ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংসে নতুন বলটা দলের একমাত্র পেসার রাহীর হাতে দেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। মূলত তৃতীয় দিনে হওয়া ২১ ওভারের মধ্যে এক ওভারও পাননি রাহি।

Advertisement

তবে আজ রৌদ্রজ্জ্বল দিনে রাহীকে দিয়েই বোলিংয়ের শুরুটা করেছে বাংলাদেশ। সফলতা মিলতেও খুব একটা দেরি হয়নি। দিনের পঞ্চম ও রাহির করা তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েছেন ওয়ারিকান। খালি চোখেই দেখা যাচ্ছিল পরিষ্কার আউট এটি। যে কারণে রিভিউ নেয়নি ক্যারিবীয়রা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় সংগ্রহ তখন ৪ উইকেটে ৫০ রান। সে ওভারেই তারা হারাতে পারত পঞ্চম উইকেটও। চতুর্থ উইকেট পতনের পর উইকেটে আসেন আগের ম্যাচের নায়ক কাইল মায়ারস। প্রথম বলেই চার মেরে শুরু করেন তিনি।

সেই ওভারের শেষ বলটি বেরিয়ে যাচ্ছিল অফস্ট্যাম্প দিয়ে। ব্যাট এগিয়ে দিয়েও সরিয়ে নেন মায়ারস, বল জমা পড়ে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গ্লাভসে। বাংলাদেশ দল আবেদন করলেও আউট দেননি আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ। রিভিউ নেয়নি বাংলাদেশ।

টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, সেই বলটি লিটনের গ্লাভসে যাওয়ার পথে মায়ারসের ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে গেছে। অর্থাৎ রিভিউ নিলে সে উইকেটটি পেতে পারত বাংলাদেশ, সাজঘরের পথ ধরতে হতো মায়ারসকে। বাংলাদেশের সিদ্ধান্থীনতায় তা আর হয়নি।

তবে বেশিক্ষণ উইকেটেও থাকা হয়নি মায়ারসের। রাহির বলেই আউট হয়েছেন তিনি। দিনের ১১তম ওভারের প্রথম বলটি শার্প সুইংয়ে ঢুকে যায় ভেতরে। ব্যাট নামিয়ে এনেও খেলতে পারেননি মায়ারস, আঘাত হানে প্যাডে। বাংলাদেশের জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার ইলিংওর্থ, উল্লাসে মাতে টাইগাররা।

মায়ারস ভেবেছিলেন বলটি লেগস্ট্যাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাবে। তাই নেন রিভিউ। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায়, রাহির সেই বল লেগস্ট্যাম্প চুমু দিয়েই যেত। যে কারণে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি মায়ারস। তার ইনিংস থেমেছে ১৬ বলে ৬ রান করে। উইকেটে আছেন এনক্রুমাহ বোনার ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড।

এসএএস/আইএইচএস/এমএস