জন ক্যাম্পবেল বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না, কী হয়ে গেলো? এভাবেও বোল্ড হতে হয়! যদিও বাংলাদেশের জন্য বিষয়টা খুবই দারুণ ব্যাপার; কিন্তু জন ক্যাম্পবেলের কাছে তো পুরোপুরিই ‘অদ্ভূত’। ক্যাম্পবেল এই ‘অদ্ভূতুড়ে’ বোল্ড হওয়ার ফলে বাংলাদেশের বোলারদের ঝুলিতে যোগ হলো মোট ৩ উইকেট। ৩৯ রানেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের নাই হয়ে গেলো টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান।
Advertisement
তাইজুল ইসলাম ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলটিকে ঠেকাতে গেলেন ক্যাম্পবেল। বল ব্যাটের নিচের কানায় লেগে মাটিতে পড়েই সোজা বাউন্স। সেটিই পেছনে গিয়ে আঘাত হানলো লেগ স্ট্যাম্পে। সাথে সাথেই উল্লাসে মেতে উঠলেন বাংলাদেশের বোলার এবং ফিল্ডাররা।
১৮ রানে ফিরে গেলেন ক্যাম্পবেল। তার যাওয়ার গতিটাও ছিল স্লো। কারণ, নিজেকেই যেন বিশ্বাস করাতে পারছিলেন না, এভাবে বোল্ড হয়ে যাবেন।
এ রিপোর্ট লেখার সময় ক্যারিবীয়দের রান ২০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪১। লিড দাঁড়িয়েছে ১৫৪ রানের। ৮ রান নিয়ে ব্যাট করছেন এনক্রুমাহ বোনার এবং ২ রান নিয়ে ব্যাট করছেন জোমেল ওয়ারিক্যান।
Advertisement
প্রথম ইনিংসেই পিছিয়ে ১১৩ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে তাই যত দ্রুত অলআউট করা যায় ক্যারিবীয়দের, ততই ভালো। সে লক্ষ্যে শুভ সূচনাটা এনে দিয়েছেন নাঈম হাসান। তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য অধিনায়ক মুমিনুল ইনিংসের ৯ম ওভারেই বোলিংয়ে নিয়ে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজকে।
বল করতে এসেই দারুন ব্রেক থ্রু এনে দিলেন মিরাজ। নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই শেন মোজলেকে সাজঘরে ফিরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে খেলায় ধরে রাখলেন এই অফ স্পিনার। মোজলে চেষ্টা করেছিলেন ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে। কিন্তু বল ছিল হালকা আউট সুইঙ্গার।
যে কারণে ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় সেকেন্ড স্লিপে। সেখানে দাঁড়ানো ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। বলটি তালুবন্দী করে নিতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি তার। সে সঙ্গে বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে টেস্টে শততম উইকেট নিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
চট্টগ্রাম টেস্টের অভিজ্ঞতা মনে রেখে ঢাকা টেস্টে রিভিউ নিয়ে ভিন্ন চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে- এমনটা আগেই জানিয়েছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। ঢাকা টেস্টে প্রথম ইনিংসে যা তা, দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই রিভিউ নিয়ে বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল এবং উইকেটরক্ষক লিটন দাস।
Advertisement
তাদের এই বলিষ্ঠ পদক্ষেপের ফলও পাওয়া গেলো হাতেনাতে। টিভি রিপ্লেতে দেখা গেলো ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের ব্যাটে নয়, বল লেগেছে তার আঙ্গুলে। যার ফলে অবধারিতভাবেই আউট। আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়ে অবশেষে আউট দিতে বাধ্য হলেন।
২৯৬ রানে বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যাওয়ার পর ১১৩ রানের লিড পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশের দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম এবং নাঈম হাসানকে দেখে-শুনে-বুঝে খেলতে থাকেন দুই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট এবং জন ক্যাম্পবেল।
চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বলটি নাঈম করেছিলেন পুরো লেগ স্ট্যাম্পের ওপর। হালকা আউটসুইঙ্গার হওয়ার কারণে বল ব্যাট-প্যাড ঘেঁষে বের হয়ে যাচ্ছিল। ব্র্যাথওয়েট ডিফেন্স করারই চেষ্টা করেছিলেন হয়তো। টাইমিং হলো না। বল ধরে আউট বলে উল্লাস শুরু করলেন লিটন দাস। বোলার নাঈমও সেই আনন্দে শামিল হলেন। কিন্তু আম্পায়ার ইলিংওর্থ, মাথা নেড়ে জানিয়ে দিলেন এটা আউট নয়।
মানতে পারেননি লিটন। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মুমিনুলকে বললেন রিভিউ নিতে। মুমিনুলও দেরি না করে রিভিউ চাইলেন। তাতেই দেখা গেলো ব্র্যাথওয়েটের আঙ্গুল এবং গ্লাভস ছুঁয়ে গেছে বল। সুতরাং, আউট।
দলীয় ১১ রানে পড়লো ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেট। ১৩ বল খেলে ৬ রান করে আউট হয়ে যান ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৪০৯ রানে অলআউট হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাব দিতে নেমে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ১৯৬ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।
আইএইচএস/এমকেএইচ