কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই প্রিয়জনকে সময় দিতে পারেন না ঠিকমতো। এতে হয়ত সঙ্গী বা সঙ্গীনির হাজারটি অভিযোগ আপনাকে নিয়ে। তাই প্রিয়জনের অভিমান ভাঙতে আজই তাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলুন।
Advertisement
একে তো পহেলা ফাল্গুন, তার উপর আবার ভালোবাসা দিবস। এ সুযোগ হাতছাড়া না করে বরং ঘুরে আসুন ঢাকার আশেপাশে দর্শনীয় ৫টি স্পট থেকে।
এতে আপনারও মন ভালো হয়ে উঠবে আর প্রিয়জনও থাকবে খুশি। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক ঢাকার আশেপাশে ৫টি স্পট সেম্পর্কে-
আড়াইহাজার মেঘনার চর
Advertisement
ঢাকার কাছে আড়াইহাজার চর এলাকা অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে। বিস্তীর্ণ এলাকায় এই রকম মনোরম পরিবেশ আর কোথাও পাবেন না এই যান্ত্রিক নগরীর আশেপাশে। সারাদিনের জন্য ঘুরতে আসতে পারেন এখানে।
চাইলে লং ড্রাইভেও যেতে পারেন। সেখানে দেখতে পারবেন কাশবন, খোলা আকাশে পাখির মেলা আর পানির স্রোতের মধুর শব্দ। খাওয়া-দাওয়া এবং ট্রলারের খরচ মিলিয়ে মোটামোটি ৩/৪ জনের জন্য ৭০০-১০০০ টাকা খরচ হতে পারে। যাওয়ার জন্য প্রথমে গুলিস্তান থেকে যেতে হবে মদনপুর। সেখান থেকে আড়াইহাজার যাবেন।
নরসিংদী জমিদার বাড়ি
জমিদার বাড়ি ঘুরতে যাওয়াটাও বেশ জৌলুসের! এ বাড়ির বাইরের দিকে তাকালেই চোখ জুড়িয়ে যায়। নিখুঁত সুন্দর্যের এই ভবনগুলো শত বছর পরও ঐতিহ্যপ্রেমী ও ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের মুগ্ধ করে তোলে। উকিল বাড়ি নামে পরিচিত নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাংগা বাজার থেকে মাত্র ১০ মিনিট এর দূরত্বে অবস্থিত লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি।
Advertisement
জমিদার বাড়ির সামনে বিশাল পুকুর। সামনে শান বাঁধানো পুকুরঘাট বা মঠ। বাড়ির সামনে খোলা জায়গায় রয়েছে কারুকার্যখচিত বড় মন্দির। মোট ২৪ কক্ষের এই ২তলা জমিদার বাড়িতে আছে ২টি খুব সুন্দর কারুকার্যখচিত বেলকোনি, লম্বা কিরিডোর, বাধানো ছাদ। খেলামেলা এই ছাদে অনেকটা চিলেকোঠার স্বাদ পাওয়া যায়। বাড়ির পিছনে আছে বিশাল গাছের বাগান।
মায়াদ্বীপ
নারায়নগঞ্জ জেলার বারদী ইউনিয়নের মায়াদ্বীপ হতে পারে বিশেষ দিনের বিকেল কাটানোর দারুন এক স্থান। মায়াদ্বীপ হলো মেঘনা নদীর বুকে ভেসে ওঠা একটি দারুন সুন্দর চর এর নাম। ঐতিহাসিক সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্যবাহী বারদী ইউনিয়নের অন্তর্গত নুনেরটেক গ্রামেই মায়াদ্বীপের অবস্থান। এ গ্রামটি মূল ভূ-খণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন।
নদীপথে সোনারগাঁ থেকে যার দূরত্ব প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার। আজ থেকে প্রায় শত বছর আগে মেঘনার বুক চিরে জেগে ওঠা চরের নাম রেখেছিল স্থানীয়রা নুনেরটেক। দর্শনীয় এ স্থানে চাইলে পরিবারের সবাই মিলে ঘুরে আসতে পারেন। যাওয়ার জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁ চৌরাস্তা (মোগরাপাড়া চৌরাস্তা) যাবেন। সেখান থেকে যাবেন বারদী, তারপর ঘাট পর্যন্ত গিয়ে ট্রলারে/নৌকায় করে যাবেন।
জিন্দা-পার্ক
১৫০ একর জায়গা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার দাউদপুর ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে জিন্দা পার্ক। ১০ হাজারের বেশি গাছ, ৫টি জলধার ও অসংখ্য পাখি রয়েছে এ পার্কে। এ ছাড়াও রয়েছে ক্যান্টিন , লাইব্রেরি, চিড়িয়াখানা এছাড়া রয়েছে ৮ টি সুসজ্জিত নৌবহর।
সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে এ পার্কটি। প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১০০ টাকা ও ছোটদের ৫০ টাকা। পার্কিং চার্জ ৫০ টাকা।
পদ্মা রিসোর্ট
ঢাকার আশেপাশের সবচেয়ে সুন্দর একটি স্পট হলো পদ্মা রিসোর্ট। ঢাকা থেকে ৪০ কি.মি. দূরে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং নামক স্থানে পদ্মা নদীতে চড়ের উপর এই রিসোর্টটি অবস্থিত। সকালের নাস্তার জন্য জনপ্রতি খরচ পড়ে ১০০ টাকা এবং দুপুর ও রাতের খাবারের জন্য জনপ্রতি খরচ পড়ে ৩০০ টাকার মতো।
পর্যটকগণ ইচ্ছা করলে অর্ধেক বেলা অথবা পুরো ২৪ ঘণ্টার জন্য কটেজ ভাড়া নিতে পারেন। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভাড়া ২ হাজার টাকা। সকাল ১০টা থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত ভাড়া ৩ হাজার টাকা। পদ্মারিসোর্ট যেতে হলে সবার প্রথমে মাওয়া ঘাটে গিয়ে রিসোর্টের নিজস্ব স্পীডবোটে করে যেতে হবে।
জল জঙ্গলের কাব্য রিসোর্ট
নাম শুনলেই বোঝা যায় স্থানটি বেশ রোমাঞ্চকর। রিসোর্টটি পূবাইলে এক সাবেক পাইলট তৈরি করেছেন। বিশাল একটি বিল, পুকুর আর বন-জঙ্গল আছে এখানে। যে কেউ চাইলে একটা দিন এখানে কাটিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।
সারাদিনের জন্য জনপ্রতি ১৫০০ টাকা (সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার আর বিকেলে স্ন্যাক্স)। এক দিন এবং একরাতের জন্য ৩০০০ টাকা জন প্রতি। শিশু, কাজের লোক ও ড্রাইভারদের জন্য ৬০০ টাকা জন প্রতি।
দুপুরের খাবার হিসেবে ১০/১২ রকম দেশি আইটেম। মোটা চালের ভাত, পোলাও, মুরগির ঝোল, ছোট মাছ আর টক দিয়ে কচুমুখির ঝোল, দেশি রুই মাছ, ডাল, সবজি এবং কয়েক রকমের সুস্বাদু ভর্তা।
এ রিসোর্টে যাওয়ার জন্য প্রথমে পূবাইল কলেজ গেট যেতে হবে। সেখান থেকে প্রায় ৩ মাইল গেলেই আপনি পেয়ে যাবেন পাইলট বাড়ি বা জল জঙ্গলের কাব্য রিসোর্ট।
জেএমএস/এএসএম