ক্যাম্পাস

ঝুঁকি ভাতা পাননি কুবির আনসার সদস্যরা

করোনার সময়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনরত আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা পাননি ঝুঁকি ভাতা।

Advertisement

‘করোনায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্যাম্পাসে পাহারা দিয়েছি। পরিবারের নিয়ে দুশ্চিন্তা হলেও দায়িত্ব পালনের কথা ভেবে বাড়িতে যাইনি। আমাদের চাকরি ছোট কিন্তু দায়িত্ব অনেক বড়। মার্চের শুরুতে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায়। এসময়েও আমরা দায়িত্ব পালন করেছি’- নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথাগুলো বলছিলেন করোনার সময়ে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার দায়িত্বে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক সদস্য।

উল্লেখ্য, গেল মার্চে দেশে করোনার প্রকোপ শুরু হলে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষশূন্য পরিবেশে ক্যাম্পাসে দেখা দেয় নিরাপত্তাহীনতা। তাই ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ২৯ সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা প্রহরীর ২৩ জন। এছাড়াও আরো দুইজন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষার সদস্য দায়িত্ব পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জনতা ব্যাংকে।

নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অন্তত চার-পাঁচজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনায় দায়িত্ব পালন করার জন্য তাদের কোনো ঝুঁকি ভাতা দেয়া হয়নি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রহরীদের আট হাজার করে ঝুঁকি ভাতা দেয়া হয়। জনতা ব্যাংকে দায়িত্ব পালন করা দুইজন আনসার সদস্যকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ১৫ হাজার টাকা করে ঝুঁকি ভাতা দেয়।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সভাপতি দীপক চন্দ্র মজুমদার বলেন, করোনার সময়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নিজস্ব প্রহরীদের আট হাজার টাকা বোনাস দেয়া হয়। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের কোনো বোনাস দেয়া হয়নি।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা আরো বলেন, ‘শুধু নিরাপত্তা না, ক্যাম্পাস পরিষ্কার করা, ঝাড়ু দেয়া, ক্যাম্পাসে ওষুধ স্প্রে করে রোগ জীবাণুমুক্ত করার কাজও করতে হয়েছে। কারণ ওই সময় সুইপাররাও ভয়ে ক্যাম্পাসে আসতো না। চাকরি ছোট হলেও দায়বদ্ধতার কারণে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে পারিনি। অন্যদেরকে ভাতা দেয়া হলেও আমাদেরকে না দেয়া একধরনের বৈষম্য’।

আনসার প্লাটুনের কমান্ডার মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘মানবিক দিক বিবেচনা করেও হলেও নিরাপত্তা প্রহরীদের ঝুঁকি ভাতা দেয়া উচিত’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা প্রহরীদের বোনাস দেয়া হয়েছে। তবে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীদের বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা না আসায় বোনাস দিতে পারিনি।

Advertisement

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কুমিল্লা জেলা কমান্ডার মোস্তাক আহমেদ বলেন, ঝুঁকি ভাতা দেয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রজ্ঞাপন জারি বা নীতিমালার ওপর নির্ভর করে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজ্ঞাপনে আছে কিনা এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি দেখবো।

বিশ্ববিদ্যায়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. অধ্যাপক আবু তাহের বলেন, ‘আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত চাকরিজীবী না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে প্রণোদনা ভাতা দিতে পারি না। তাদের ভাতা দিবে সরকার। তাদের প্রতি আমরা বৈষম্য করিনি।’

এসএমএম/এএসএম