দেশজুড়ে

ফসলি জমিতে হঠাৎ সারি সারি ঘর

গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের ধনুয়া থেকে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গা পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার গ্যাসের পাইপলাইন প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। এ খবর পেয়ে এক শ্রেণির অসাধু চক্র প্রকল্পের ম্যাপ অনুযায়ী ওই জমিতে অস্থায়ী ঘর বাড়ি নির্মাণ করেছে। সখীপুরের পাঁচটি গ্রামের ফসলের জমিতে ওই চক্রের লোকজন খুবই নিম্নমাণের সামগ্রী ব্যবহার করে এসব টিনের ছাপরা ঘর তুলেছেন।জানা যায়, জমির মূল্য বাড়াতে ও সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে দুর্বল অবকাঠামো নির্মাণ করে কোটি কোটি টাকা ফায়দা লুটছেন।উপজেলার সিলিমপুর গ্রামের আবদুল হামিদের জমিতে ৫০ হাত লম্বা একটি, স্কুল শিক্ষক শাহজাহানের এক একর জমিতে দুটি, গজারিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য গজারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আমিন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমানের জমিতে দুটি, পাথারপুর গ্রামের গোলাম নবী, বিল্লাল হোসেন ও স্কুল শিক্ষক আজাহারুল ইসলামের জমিতে তিনটি, কালমেঘা গ্রামের হুমায়ুন খান, আলম খান, মোসলেম উদ্দিন মৃধার জমিতে তিনটিসহ ১১টি ঘর তোলা হয়েছে। এ ব্যাপারে গজারিয়া গ্রামের নূরুল আমিন বলেন, গ্যাস পাইপলাইনে আমার এক একর আবাদি জমি পড়েছে। আমার কাছ থেকে ওই জমি এক বছরের জন্য এক লাখ ২০ হাজার টাকা নগদ দিয়ে ইজারা নিয়েছেন ঢাকার উত্তরার এক ব্যক্তি। ১১ জন জমি মালিকের কেউই ওই চক্রের নাম-পরিচয় দিতে চাননি। তবে দালালরা সবাই গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের বাসিন্দা বলে জানা যায়।উপজেলার গজারিয়া, কালমেঘা ও পাথারপুর গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘরগুলোর উচ্চতা চার থেকে পাঁচ ফুট, প্রস্থ আট থেকে দশ ফুট। ঘর চলে গেছে টানা ৪০০ থেকে ৫০০ ফুট পর্যন্ত। দীর্ঘ এসব ঘরে প্রবেশের দরজা খুঁজে পাওয়াই কঠিন। ফসলি জমিতে হঠাৎ গজানো ওই ঘরগুলোকে কেউ কেউ অবশ্য গ্যাসের ঘরও বলে থাকেন।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ প্রকল্পের নাম `কনস্ট্রাকশন অব ৩০ ইঞ্চি ডায়া ১০০০ পিএসআইজি ট্রান্সমিশন লাইন শ্রীপুর-এলেঙ্গা সিজিএস ৫২ কিলোমিটার।` এ ব্যাপারে প্রকল্পের পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে মানচিত্র অনুযায়ী যে জায়গা দিয়ে লাইনটি যাবে সেসব জায়গার ভিডিওচিত্র আগেই ধারণ করা হয়েছে। অতএব ক্ষতিপূরণ তোলার আশায় ঘর তুলে থাকলে তারা ভুল করেছেন। তিনি দাবি করেন, ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এখনো টেন্ডার হয়নি। এ ব্যাপারে সখীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফা সিদ্দিকী জাগো নিউজকে বলেন, যারা জমির মূল্য বাড়াতে ও ক্ষতিপূরণের আশায় এসব স্থাপনা করেছেন তারা ঠিক করেননি।এসএস/আরআইপি

Advertisement