দেশজুড়ে

প্রতীক নয় লড়াই হবে ব্যক্তি ইমেজে

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রার্থীদের নির্ঘুম প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌর নির্বাচন। উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা।

Advertisement

তবে ভোটাররা বলছেন ভিন্ন কথা- এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নয়, প্রার্থীদের ব্যক্তি ইমেজের ওপরেই পড়বে ভোটারদের ভোট। পৌর নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ১৪ ফেব্রুয়ারি রাণীশংকৈল পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৭০২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার সাত হাজার ৩৯০ ও নারী ভোটার সাত হাজার ৩১২ জন।

২০১৬ সালে ২০ দল মনোনীত প্রার্থী মোকাররম হোসাইনকে পরাজিত করে এ পৌরসভার মেয়র হোন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলমগীর সরকার। এবারে নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করছেন তিনি। এছাড়া আওয়ামী লীগের আরো ছয়জন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Advertisement

রাণীশংকৈল পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২ জন প্রার্থী। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বর্তমান মেয়র আলমগীর সরকার (ক্যারাম বোর্ড), অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল খালেক (জগ), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নওরোজ কাউসার কানন (চামচ), পৌর আওয়ামী লীগের সম্পাদক সাবেক ভিপি রফিউল ইসলাম (কম্পিউটার), আওয়ামী লীগ নেতা ইসতেখার আলী (মোবাইল ফোন), পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সম্পাদক সাধন বসাক (নারিকেল গাছ), রুকুনুল ইসলাম ডলার (রেল ইঞ্জিন)। এরমধ্যে ইসতেখার আলী আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নিজেকে নির্বাচন থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন।

অপরদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুন নবী পান্না বিশ্বাস (ধানের শীষ), বিদ্রোহী প্রার্থী পৌর বিএনপির সদস্য মোখলেসুর রহমান (হ্যাঙ্গার), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আলমগীর হোসেন (লাঙল), নির্দলীয় প্রার্থী মোকাররম হোসাইন (ইস্ত্রি) প্রতীকে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এদের মধ্যে মোখলেসুর রহমান নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

নির্বাচনে মেয়র পদের পাশাপাশি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই পৌরসভার বাজারঘাট শহরের অলিগলি জুড়ে ঝুলছে প্রার্থীদের প্রতীক সম্বলিত পোস্টার। সেইসঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে উচ্চ শব্দে মাইকিং।

Advertisement

অন্যদিকে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সাধারণ ও মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। প্রার্থীরা উঠান-বৈঠক, পথসভা, গণসংযোগসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ভোটাররা বলছেন, বড় আলোচনা হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তি ইমেজে। তবে এবার পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকায় ব্যক্তি ইমেজের প্রভাব থাকছে।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভোটাররা পৌরসভার উন্নয়নের কথা চিন্তা করে নৌকা মার্কায় ভোট দিবে। আমি নির্বাচিত হলে পৌরসভাকে একটি জবাবদিহিতামূলক আধুনিক মডেল পৌরসভায় রূপান্তর করবো।

বিএনপি মনোনীত মাহমুদুন নবী বলেন, ভোট কারচুপির একটা শঙ্কা তো রয়েছেই। তারপর বিগত সময়গুলোতে পৌরবাসী বিএনপির মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করেছে, তাই এবারও আশা রাখছি পৌরবাসী আমাকেই জয়ী করবে।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলমগীর সরকার বলেন, বিগত পাঁচ বছর আমি পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়নসহ মানুষের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়িয়েছি। তাই বিশ্বাস করি জনগণ আমাকে আবার নির্বাচিত করবে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মোকাররম হোসাইন বলেন, ভোটারদের কাছে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। প্রশাসনিক কোনো বাধা বা অনিয়ম না হলে আমিই জয়ী হব।

অফিসার ইনর্চাজ এস এম জাহিদ ইকবাল বলেন, এ পর্যন্ত পৌর নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভোটের মাঠে যেকোনো বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পুলিশ সর্বদা মাঠে রয়েছে।

এদিকে কোনো প্রার্থী যাতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন না করতে পারেন, সেদিকে সার্বিক নজরদারি রাখছেন বলে জানান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আখিঁ সরকার।

তানভীর হাসান তানু/এসএমএম/এমকেএইচ