মৌলভীবাজারের প্রত্যন্ত এলাকা রাজনগরের মনসুর নগর চৌধুরীবাজার। এই বাজারেই চারদিক খোলা টিনের এক চালা ছোট্ট দোকান। তবে সেই টঙ দোকানেই উপচে পড়া ভিড়। এ ভিড় শুধুই চায়ের জন্য। ছোট্ট এই দোকানটিতে চলে রাতভর চায়ের আড্ডা। জনপ্রিয় মালাই চায়ের কাপে চুমুক দিতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই এসে ভিড় জমান।
Advertisement
চৌধুরী বাজারের শাহ মোস্তফা টি পয়েন্টের মালাই চায়ের সুনাম ছড়িয়েছে অনেক দূর। লোক মুখে এবং ফেসবুকে প্রচার হওয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই মালাই চা। মধ্যরাত পর্যন্ত পর্যটকরা এখানে আসেন চায়ের স্বাদ নিতে।
দুই বছর আগে মালাই চা বিক্রি শুরু করেন হাবিবুর রহমান ইকবাল। দুধ প্রক্রিয়াজাত করে নতুন চা তৈরি শুরু করেন। অল্প দিনের মধ্যেই তার চায়ের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।
দেশের সিংহভাগ চা উৎপাদন হয় মৌলভীবাজার জেলায়। সে কারণে অন্যান্য জেলার তুলনায় এই জেলায় চায়ের একটা গৌরব ও ঐতিহ্য রয়েছে। তাতে আরেকটু খ্যাতি যোগ করেছে রাজনগরের এই মালাই চা।
Advertisement
মালাই চায়ের কারিগর হাবিবুর রহমান ইকবাল বলেন, ‘দুই টাকা দিয়ে চা বিক্রি শুরু করেছিলাম। এখন বিশ থেকে একশ টাকা পর্যন্ত চায়ের কাপ বিক্রি করি। মালাই চা তৈরি করি খাঁটি গরুর দুধ থেকে। অন্যান্য যে চা তৈরি করি, সেগুলো গরু ও পাউডার দুধের মিশ্রণে। কিন্তু মালাই তৈরি হয় শুধুই গরুর দুধ দিয়ে। প্রতিদিন প্রায় ৪০ লিটার গরুর দুধের প্রয়োজন হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘চায়ের গুণগতমান ও পরিচ্ছন্নতা থাকায় লোকজন এখানে আসেন। যতদিন বেঁচে থাকবো মানুষের সেবা দিয়ে যাব। এখন সাতটি পরিবার চলে আমার এই দোকানের আয় থেকে।’
এলাকার বাসিন্দা ইমন বলেন, ‘সন্ধ্যার পর এখানে এলেই দেখা যায় জমজমাট আড্ডা। কেউ দাঁড়িয়ে চা পান করছেন, কেউ বসে।’
চা খেতে মৌলভীবাজার থেকে আসা মাজিদ আহমেদ বলেন, ‘শহর থেকে প্রতিদিনই লোকজন আসেন। তারা ফেসবুকে চেকইন দেন যে রাজনগরের চা অনেক সুস্বাদু। এটা জেনেই এখানে আসা। বাস্তবে চা পান করে দেখলাম অনেক মজাদার। ফেসবুকে যে রকম বলা হয়, তার চেয়েও অনেক বেশি সুস্বাদু এই চা।’
Advertisement
এমএইচআর/এমকেএইচ