আসন সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিগত বছর ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থীর সংকটে বিপুল সংখ্যক শূন্য থাকলেও চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী পাশ করায় ছোটবড় সকল বেসরকারি মেডিকেল কলেজের পোয়াবারো অবস্থা।ইতিমধ্যেই বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর সাধারণ আসনে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখনও বহু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ভর্তির জন্য বিভিন্ন কলেজে ধরনা দিচ্ছেন। এ সুযোগে মোটা অঙ্কের অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিতে বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ মন্ত্রী, সচিব, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ ও চিকিৎসক নেতাকে দিয়ে আসন সংখ্যা বাড়িয়ে নিতে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কমপক্ষে দেড় ডজন মেডিকেল কলেজ সর্বনিম্ন পাঁচ থেকে ২০টি পর্যন্ত আসন সংখ্যা বৃদ্ধির আবেদন জমা দিয়েছে। বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি সংক্রান্ত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভাশেষে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের আসন সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়েও সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু আসন সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. আবদুর রশীদ।বুধবার রাতে জাগো নিউজের প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে সকল মেডিকেল কলেজ আসন সংখ্যা বৃদ্ধির আবেদন করেছে তাদের কলেজে নীতিমালা অনুসরণ করে শিক্ষক, চিকিৎসক, হাসপাতাল, বেড ও রোগী রয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলেন, সব কিছু তো আপনাদের (গণমাধ্যম) বলা যাবে না।অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারিত ভর্তি ফি ১৫ লাখ ১০ হাজার টাকার সিলিং বেঁধে দিলেও চাহিদা বেশি থাকায় ২০ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা দেয়ার গোপন শর্তে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির অপচেষ্টা চলছে। অভিযোগ রয়েছে কোনো কোনো মেডিকেল কলেজ একটি আসন বৃদ্ধির জন্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পাঁচ লাখ থেকে সাত লাখ টাকা উৎকোচ দেয়ার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে।জানা গেছে, দেশের ৬৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে বর্তমানে আসন সংখ্যা প্রায় আট হাজার। তন্মধ্যে শতকরা ৫০ ভাগ আসন বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। চলতি বছর মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ৪৮ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী পাশ করেছে। আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে দ্রুত হয়ে যায়। এখনও চাহিদা থাকায় আসন সংখ্যা বৃদ্ধির জোর প্রচেষ্টা চলছে।বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) এর একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদরা তাদের স্বজনদের ভর্তির জন্য তদবির করছেন। ওদেরকে ভর্তি করার শর্তে তারা নীতিমালা ভঙ্গ করে করে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করতেও রাজি আছেন বলে তাদের জানিয়েছেন।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, আগামী ২৬ নভেম্বর আসন সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।এমইউ/বিএ
Advertisement