দেশজুড়ে

বুড়িমারী দিয়ে প্রথম দফায় ৬২ জন ভারত যাচ্ছেন

বিলুপ্ত ছিটমহল থেকে ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণকারীরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বুড়িমারী জিরো পয়েন্ট চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়তে শুরু করবেন। প্রথম দফায় হাতীবান্ধার উত্তর গোতামারী বিলুপ্ত ছিটমহল থেকে ১৮ পরিবারের ৬২ জন নারী-পুরুষ ও শিশু যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাতীবান্ধা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান।    বুধবার দিনটি ছিল তাদের জন্য শেষ দিন। তাদের দেখতে বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন ও আত্মীয়- স্বজন সাক্ষাৎ করছেন। শেষ মুহূর্তে অনেকের মাঝে বিদায় বেলার বেদনায় দুই চোখে পানি ঝড়েছে। ভারতরে নাগরিকত্ব গ্রহণকারী পরিবারের মধ্যে যারা বাংলাদেশে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তাদের কষ্টের শেষ নেই। কানন বালা (৪৫) জাগো নিউজকে বলেন, বাংলাদেশে দুই মেয়ে-জামাই ও নাতি-নাতনি রেখে চলে যাবো বলে খুবই কষ্ট লাগছে। কী করবো? স্বামীর সঙ্গেতো যেতেই হবে।   স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের মোট নয়জনকে নিয়ে ভারত যেতে অপেক্ষায় থাকা বিনোদ চন্দ্র বর্মণ (৫৬) জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের আত্মীয়-স্বজনদের অনেকেই রয়েছেন ভারতে। এছাড়া শুনেছি সেখানে গেলে রেশন কার্ড, থাকার জায়গাসহ সবকিছু পাবো তাই চলে যাচ্ছি।ববিতা রাণী (২৩) জাগো নিউজকে বলেন, বাবার বাড়ি বাংলাদেশের মূল ভুখণ্ডে হলেও তার বিয়ে হয়েছিল ছিটমহলের বাসিন্দা তপন কুমারে সঙ্গে। স্বামীর সঙ্গে তিনিও ভারত যেতে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন। তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী যেহেতু ভারতে যাবে তাই আমিও চলে যাব। তবে বাংলাদেশে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের জন্য মন খারাপ হচ্ছে।লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাটের সঙ্গে মিশে যাওয়া সদ্য বিলুপ্ত ৫৯টি ছিটমহলের মধ্যে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলার ৪০ পরিবার ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। ওই পরিবারগুলো পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দর অভিবাসনের (চেকপোস্ট) বৃহস্পতিবার থেকে পর্যায়ক্রমে বাস ও ট্রাকযোগে ভারতের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ এলাকার আবাসনে আশ্রয় নেবেন।পাটগ্রাম উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর কুতুবুল আলম জাগো নিউজকে জানান, ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও জানান, ১৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বুড়িমারী জিরো পয়েন্ট চেকপোস্ট দিয়ে প্রথম যাচ্ছেন হাতীবান্ধার দুটি বিলপ্ত ছিটমহলের ৬২ জন। ২৩ নভেম্বর যাবেন পাটগ্রামের সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহল ১১২, ১১৫ ও ১১৯ বাঁশকাটা, ১১৪ লতামারী, ১১৫ খড়খড়িয়া নামক এলাকার ৩১ পরিবারের ১৩৩ নারী-পুরুষ ও শিশু।রবিউল হাসান/এমজেড/পিআর

Advertisement