কৃষি ও প্রকৃতি

শুরুতেই হতাশ পটুয়াখালীর তরমুজ চাষিরা

করোনার আঘাত শেষ হতে না হতেই মৌসুমি ফসল তরমুজ চাষের স্বপ্ন বুনছেন পটুয়াখালীর চর অঞ্চলের তরমুজ চাষিরা। মাঠের পর মাঠ ঢেকে আছে সবুজে ঘেরা তরমুজ গাছে। এ খেত দেখে মুখে হাসি তরমুজ চাষিদের। কিন্তু সে হাসি আস্তে আস্তে উবে যাচ্ছে। পোকার আক্রমণ ও গোড়া পচা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে তরমুজ গাছ।

Advertisement

উৎপাদন খরচই উঠবে কি-না এমন চিন্তায় দিন পার করছেন তরমুজ চাষিরা। তবে সঠিক সময়ে সঠিক মাত্রায় ও সঠিক বালাইনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে রোগ ও পোকা দমন করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা।

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বিভিন্ন তরমুজ খেতে রোগ বা কাটুই পোকার আক্রমণ ও গোরা পচা রোগে তরমুজ গাছের গোড়ায় পচন ধরে হলদে বা লালচে রঙ্গের হয়ে মারা যাচ্ছে। এ সমস্যা থেকে তরমুজ গাছকে রক্ষা করতে না পারলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি বছর ৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। এ বছর নতুন করে অনেকে জমি প্রস্তুত করছেন তরমুজ চাষিরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডিসেম্বর থেকেই তরমুজের চাষ শুরু করেন কৃষকেরা। শীত শেষে এ ফসলটি বাজারজাত শুরু করার কথা রয়েছে। গত বছর উপজেলায় ৭ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে এ রসালো ফলের চাষ করা হয়েছে।

Advertisement

উপজেলার চর-ইমারশন গ্রামের তরমুজ চাষি মো. বেল্লাল জানান, গত বছরে তরমুজে তেমন লাভ করতে পারিনি। এবার ১ হেক্টরও জমিতে দেড় লাখ টাকা দিয়ে তরমুজ চাষ করেছি। তরমুজ চারা দেখে মন ভালো লাগলেও হঠাৎ করে তরমুজ গাছ মারা যাচ্ছে। বিষয়টি দেখে রোগ প্রতিরোধে নানান প্রকার কিটনাশক ব্যবহার করলেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। এভাবে যদি তরমুজ গাছ মারা যায় তাহলে পথে বসে যেতে হবে।

একই গ্রামের তরমুজ চাষি আবুল গাজী জানান, ঋণ নিয়ে জমিতে তরমুজ চাষ করি। হঠাৎ করে দেখতে পাই তরমুজ গাছগুলো মরে যাচ্ছে। এভাবে যদি আক্রমণ বাড়তে থাকে তাহলে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠাতে পারবো কীনা জানি না। আর ঋণ কিভাবে শোধ করবো তা নিয়ে চিন্তা করছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, গতকাল কিছু এলাকা থেকে এমন অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে গিয়ে দেখতে চাই আসলে অবস্থা কেমন। অনেক সময় কাটুই পোকা গাছের গোড়া কেটে দেয় এতে গাছ মরে যেতে পার। কিংবা গোড়া পচা রোগের কারণে গাছ মারা যায়।

গাছগুলো ঢলে পরা রোগেও আক্রান্ত হতে পারে। রোগে আক্রান্ত জমিতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে কীটনাশক প্রয়োগ না করে চাষ করা হয় তাহলে বারবার ওই জমিতে রোগে আক্রান্ত হওয়ার থাকবেই। তিনি আরও জানান, কৃষকের সেবায় কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মাঠে থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

Advertisement

এমএমএফ/এমএস