রাশিয়ার অন্যতম বিরোধী নেতা এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সেই নাভালনি বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কোমায় চলে যাওয়ার সময় তাকে চিকিৎসা দেয়া রুশ চিকিৎসক মারা গেছেন। সার্জেই ম্যাক্সিমিশিন নামে ওই চিকিৎসক ওমস্ক ইমারজেন্সি হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন। নাভালনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে এই হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছিল এবং সেসময় তার চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন ম্যাক্সিমিশিন।
Advertisement
এই চিকিৎসক মাত্র ৫৫ বছর বয়সে হঠাৎ করে মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ওমস্ক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ওমস্ক ইমারজেন্সি হাসপাতালের ডেপুটি চিফ ফিজিশিয়ান সার্জেই ম্যাক্সিমিশিন মারা গেছেন। তবে এ চিকিৎসকের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।
গত ২০ আগস্ট সাইবেরিয়া থেকে মস্কো যাওয়ার পথে ভয়ঙ্কর বিষ নোভিচকের প্রভাবে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন রুশ বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি। একারণে ওমস্কে জরুরি অবতরণ করে তাকে বহনকারী বিমানটি। সেখানে ওমস্ক ইমারজেন্সি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নাভালনিকে।
Advertisement
রুশ নেতা চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় একবারও সাংবাদিকদের সামনে আসেননি ম্যাক্সিমিশিন। অথচ ওই সময় হাসপাতালটির অন্যতম জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক ছিলেন তিনি।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ধীরে ধীরে কোমায় চলে যান নাভালনি। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে টানা পাঁচ মাস চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে কিছুদিন আগে নিজদেশে ফিরেছেন পুতিনের কট্টর এই সমালোচক। তবে রাশিয়ায় পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার হন তিনি। এরপর সাজা স্থগিতের একটি শর্ত লংঘনের দায়ে নাভালনিকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন মস্কোর একটি আদালত।
নাভালনি বরাবরই তাকে বিষপ্রয়োগের পেছনে রুশ নিরাপত্তা বাহিনী এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের সরাসরি হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
নাভালনির চিফ অব স্টাফ লিওনিড ভলকোভ নিশ্চিত করেছেন, রুশ বিরোধী নেতার চিকিৎসা- বিশেষ করে কোমায় থাকায় অবস্থায় সেবা দেয়া বিভাগের প্রধান ছিলেন সার্জেই ম্যাক্সিমিশিন।
Advertisement
ভলকোভ বলেন, নাভালনির অবস্থার বিষয়ে যে কারো চেয়ে বেশি জানতেন ম্যাক্সিমিশিন। তাই আমি বাজে কোনো কিছু হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারছি না। অবশ্য রাশিয়ার স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল এবং এখানে তার বয়সী চিকিৎসকদের হঠাৎ মৃত্যু নতুন কিছু নয়। এ বিষয়ে কোনো তদন্ত হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
সূত্র: সিএনএন
কেএএ/জেআইএম