সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় আরও দুইজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এ নিয়ে এ মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য নেয়া হলো। বৃহস্পতিবার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।বুধবার দুপুরে সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মকবুল আহসানের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়।বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার কর জাগো নিউজকে জানান, মিজানুর রহমান ও নজরুল ইসলাম নামের দুই প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। তারা ঘটনার সময় আহতও হয়েছিলেন।আলোচিত এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষে বুধবার কারাগারে আটক থাকা ১৪ আসামির মধ্যে হবিগঞ্জের মেয়র জিকে গউছ, হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ১২জনকে আদালতে হাজির করা হয়। অসুস্থতার কারণে হাজির করা হয়নি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে। অসুস্থতার কারণে আদালতে বাবর ও আরিফুল ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন। তবে তাদের আইনজীবীরা আদালতে হাজির থেকে আইনি কার্যক্রম চালাবেন বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়। আরিফুল হক ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি নিয়ে ইতোমধ্যে তার নিয়োগকৃত আইনজীবী মো. লালা তার পক্ষে হাজিরা দিয়ে আসছেন। কিন্তু বাবর বুধবার আদালতে অনুপস্থিত থাকায় তার আবেদনের ব্যাপারে শুনানি হয়।গত ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার বাদী হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ খানের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। এই মামলায় মোট ১৭১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করার কথা রয়েছে।টানা নয় দফা পেছানোর পর গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলার কারান্তরীণ সকল আসামির উপস্থিতিতে সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মকবুল আহসান চার্জ গঠন করেন। মোট ৩২ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জ গঠন করা হয়েছে।অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিসিকের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জিকে গউছ, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান প্রমুখ।প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। ওই হামলায় নিহত হন কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।তিন দফা তদন্তের পর এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুন নেছা পারুল ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর আরিফুল, গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে মোট ৩২ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ মামলাটি বিচারের জন্য গত ১১ জুন সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেন। ছামির মাহমুদ/এসএস/আরআইপি
Advertisement