মদপানে মৃত্যু হওয়া রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছাত্রী কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে রেস্টুরেন্টে হালকা নাস্তার পর মদ পান করেন। এরপর তাদের মধ্যে থাকা শাফায়াত জামিল (২২) অসুস্থ বোধ করায় বাসায় চলে যান। আদালতে দেয়া হলফনামায় এসব তথ্য জানান শাফায়াত।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসির আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।
এদিন আদালতে হলফনামা দিয়ে মামলায় সম্পৃক্ততার ইচ্ছা প্রকাশ করেন শাফায়াত। এরপর বিচারক ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
হলফনামায় শাফায়াত দাবি করেন, গত ২৮ জানুয়ারি বন্ধু আরাফাতের নিমন্ত্রণে উত্তরার সুইট রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন তিনি। রেস্টুরেন্টে আরাফাত ও তার আরেক বন্ধু মুর্তজা রায়হান চৌধুরী তার বান্ধবীকে নিয়ে আসেন।
Advertisement
মুর্তজা ও তার বান্ধবীর পূর্বপরিচিত ছিল না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তারা হালকা নাস্তার পর মদ পান করে চলে যান। আমি অসুস্থ বোধ করলে রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় চলে যাই। ৩০ জানুয়ারি আরাফাত মারা যান।’
গণমাধ্যমে মুর্তজা রায়হানের বান্ধবীর মৃত্যুর কথা জেনেছেন দাবি করে শাফায়াত বলেন, ‘এরপর পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আমার বাসায় অভিযান চালায়। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আরাফাতসহ চারজন ও অজ্ঞাতনামা একজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। যেহেতু পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা আমার বাসায় অভিযান চালায়, সেহেতু অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে আমি নিজেকে সন্দেহ করছি। আমি নিজেকে এ মামলায় সম্পৃক্ত হতে ইচ্ছুক।’
শাফায়াত রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থী।
এর আগে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি তার দুই বন্ধু মুর্তজা রায়হান চৌধুরী (২১) ও নুহাত আলম তাফসীরের (২১) পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
Advertisement
ওইদিনই চারজনকে আসামি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছিলেন নিহত তরুণীর বাবা। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও একজনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আরাফাতের বাসায় যান। সেখানে স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী এবং রায়হান একসঙ্গে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, মদপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে নুহাতের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিল।
ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খানকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরদিন এসে তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর তার মৃত্যু হয়।
জেএ/এসএস/এমকেএইচ