হাটহাজারী উপজেলার ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদ। প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সেখানকার স্থানীয়দের জন্ম ও মৃত্যুসনদ প্রস্তুতকারী ও পরিষদের সচিব হিসেবে স্বাক্ষর করে যাচ্ছেন মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। যিনি সরকারি কোনো কর্মকর্তা তো নন-ই; ইউনিয়ন পরিষদের নিয়মিত কর্মচারীও নন।
Advertisement
মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শনকালে এ ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম ও মৃত্যুসনদে প্রায় এক যুগ ধরে স্বাক্ষর করেন না ইউপি সচিব। তার জায়গায় স্বাক্ষর করেন বেলাল নামে ইউনিয়ন পরিষদের একজন ক্যাজুয়াল স্টাফ। যিনি সরকারি কর্মচারী না, তাকে নাকি কোনো ইউপি চেয়ারম্যান কাজ করতে বলেছেন, এটাই তার পরিচিতি।’
রুহুল আমিন বলেন, ‘এ সময় সরকারি সনদে তার স্বাক্ষরের এখতিয়ার আছে কি না জানতে চাইলে ওই কর্মচারী কোনো জবাব দিতে পারেননি। তাকে পরিষদ নিয়োগ দিয়েছে বলে দাবি করলেও তিনি কোনো নিয়োগপত্র দেখাতে পারেননি।’
Advertisement
ইউএনও বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ আইন-২০০৯ অনুযায়ী সরকারের পূর্বানুমতি ব্যতীত ইউনিয়ন পরিষদ অতিরিক্ত কর্মচারী নিয়োগ দিতে পারেন না। এই ব্যক্তির নিয়োগের বেলায় ইউনিয়ন পরিষদ সরকারের অনুমতি নিয়েছে এ রকম প্রমাণ দেখাতে পারেনি। ইউনিয়ন পরিষদ সচিবের স্থলে একজন বাইরের লোক কিভাবে স্বাক্ষর করে এ বিষয়ে উপস্থিত সবাই বিস্ময় প্রকাশ করেন।’
এ বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন পরিষদ সচিব আলী হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, পরিদর্শনকালে ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সুমন নামে এক ব্যক্তি ভুল তথ্য দিয়ে একই নামে দুইটি জন্মসনদ নেয়ার বিষয়টিও শনাক্ত হয়। জন্মসনদের একটিতে তার জন্ম ১৯৯৭ সালে, আরেকটিতে তার জন্ম ১৯৯০ সালে। ভুল তথ্য দিয়ে জন্ম সনদ নেয়ার জন্য তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। এজন্য পরিষদের সচিবসহ দায়ীদের শোকজ করা হয়েছে।
আবু আজাদ/এআরএ/এমএস
Advertisement