অতিথি সেজে বাসায় গিয়ে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে একই পরিবারের চারজনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে করা মামলায় চার আসামিকে বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
চার আসামি হলেন- সুমন ঢালী ওরফে ডাকু সুমন, জাকারিয়া হোসেন জনি, সুমন ওরফে সিএনজি সুমন ও মো. নাসিরউদ্দিন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। অতিথি সেজে সেদিন সাজুর বাসায় যায় এসব আসামিরা।
এ বিষয়ে আসামিদের আপিল খারিজ ও ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ করে রোববার (৩১ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক খান ফরিদ ও হেলাল উদ্দিন মোল্লা।
Advertisement
আইনজীবীরা জানান, ২০১৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কদমপুর এলাকার ছয়তলা একটি ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে অটোরিকশা চালক সাজু আহমেদ (৩৫), তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম (২৬), ছেলে ইমরান (৫) ও মেয়ে সানজিদার (৩) হাত-পা-চোখ বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় সাজুর ভাই বশিরউদ্দিন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
মামলার তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, নিহত সাজুসহ আসামিরা একই ডাকাত দলের সদস্য ছিলেন। আসামির মধ্যে সুমন ঢালী ও জনি তাদের স্ত্রীর সঙ্গে সাজুর পরকীয়া সম্পর্ক ছিল বলে সন্দেহ করতেন। এছাড়া সুমনের মোটরসাইকেল ও তার স্ত্রীর হাতের রুলি চুরি যাওয়ার ঘটনায় সাজুকে সন্দেহ করতেন তিনি।
এসব ক্ষোভ থেকে আসামিরা অতিথি সেজে সেদিন সাজুর বাসায় যায় এবং সেখানেই রাত্রিযাপন করেন। রাতের কোনো একসময় আসামিরা ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে সাজু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে। পরে পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করে।
২০১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের ৬ জুন আদালত অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন। বিচার শেষে ২৬ নভেম্বর রায় দেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ। রায়ে এ চার আসামির মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।
Advertisement
পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন। শুনানি শেষে আসামিদের আপিল ও জেল আপিল খারিজ করে দিয়ে ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ করে রায় দেন উচ্চ আদালত।
এফএইচ/এআরএ/এমএস