ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রথম সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে চীনা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনকে প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে হাঙ্গেরি। দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফার্মাসি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য সিনোফার্মের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের বিষয়ে নিশ্চিত করে।
Advertisement
এর আগে গত সপ্তাহে দেশটির প্রধানমন্ত্রী অর্বান ভিক্টর এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন, ‘ইইউভুক্ত অন্যান্য দেশের মতো হাঙ্গেরিও ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে করোনা প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে, যদিও আমি এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারিনি। তবে কেউ যদি এ মহূর্তে আমাকে করোনার ভ্যাকসিন নিতে বলেন তাহলে সবার প্রথমে আমি চীনের তৈরি টিকাকে অগ্রাধিকার দেব।’
প্রধানমন্ত্রী অর্বান আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল ছিল চীন এবং এ কারণে অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনাবিষয়ক কোনও গবেষণার ক্ষেত্রে চীন সবার ওপরে। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে কোনও করোনার ভ্যাকসিনের তুলনায় চীনের তৈরি ভ্যাকসিন করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হবে।’
বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে চীনা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিনোফর্মের তৈরি ভ্যাকসিনকে জরুরিভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের এ দেশটি। এমনকি গত সপ্তাহে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রথম সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়ার তৈরি করোনাভ্যাকসিন স্পুটনিক ভিকেও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছিল দেশটির প্রশাসন।
Advertisement
তবে ইইউভুক্ত অন্য কোনও দেশ এখনও ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এককভাবে ফাইজার ও বায়োএনটেক কিংবা মডার্না ও অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রোজেনকা উদ্ভাবিত করোনার টিকা ছাড়া অন্য কোনও টিকাকে অনুমোদন দেয়নি।
হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজারতো বলেছেন, চূড়ান্তভাবে করোনা নির্মূল করতে আমরা আমাদের দেশের শতকরা ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে চাই। শুধুমাত্র ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ওপর নির্ভর করলে আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না।
যেসব উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন গঠিত হয়েছিল সেগুলো থেকে সংস্থাটি অনেকটা দূরে সরে এসেছে। পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। তাই আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনের স্বার্থে রাশিয়া ও চীনসহ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী যে কোনও প্রতিষ্ঠানের থেকে করোনার ভ্যাকসিন ক্রয় করতে চাই। কোন দেশে কোন টিকা উৎপাদিত হলো সেটি আমাদের কাছে বিবেচ্য বিষয় নয়।’
অন্যান্য ভ্যাকসিনের সঙ্গে সিনোফার্মের তৈরি করোনার ভ্যাকসিনের পার্থক্য হলো এখানে প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ভাইরাল ভেক্টর কিংবা এমআরএনএর পরিবর্তে সরাসরি নিষ্ক্রিয় ভিরিয়েড কণা ব্যবহার করা হয়েছে। চীনের বাইরে তুরস্ক, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, বাহরাইন ও সার্বিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে এ ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী এ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৫০.৪ থেকে ৭৮ শতাংশ।
Advertisement
এমআরএম/এমকেএইচ