জাতীয়

দুই বছর খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার সুপারিশ

করোনাকালে সৃষ্ট বৈষম্য কমাতে দুই বছরের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে বিশিষ্টজনরা। তারা এ বিষয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে কৌশল নিরূপণ এবং বাজার ও সাপ্লাই চেইন নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

Advertisement

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) ‘দক্ষিণ এশিয়ার বৈষম্য পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এই আহ্বান জানান।

সাউথ এশিয়ান অ্যালায়েন্স ফর পোভার্টি ইরাডিকেশন (স্যাপি), ফাইট ইন ইকুয়ালিটি অ্যালায়েন্স, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস), ইনসিডিন বাংলাদেশ, ভয়েস, জনউদ্যোগ ও অক্সফাম যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সঞ্চালনায় সভায় ‘করোনাকালীন বৈষম্য ও অসমতা’ বিষয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অক্সফামের পলিসি, অ্যাডভোকেসি, ক্যাম্পেইন ও কমিউনিকেশন প্রধান এসএম মঞ্জুর রশিদ। আলোচনায় অংশ নেন বিআইডিএস’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি ডা. রশিদ-ই-মাহবুব, জনউদ্যোগের আহ্বায়ক ডা. মুশতাক হোসেন, শ্রমিক নেতা খায়রুল মামুন মিন্টু, ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইইডি) নির্বাহী পরিচালক নূমান আহম্মেদ খান, ইনসিডিন বাংলাদেশের পরিচালক এ কে এম মুশতাক আলী, আদিবাসী নেতা চঞ্চনা চাকমা, সলিডারিটির প্রতিনিধি মোর্শেদ বদরুন্নেসা, শ্রমিকনেতা অরবিন্দ ব্যাপারী, হেক্স বাংলাদেশের ছাইবুন প্রমুখ।

Advertisement

আলোচনায় অংশ নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, করোনাভাইরাস মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ানোর পাশাপাশি জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে। দরিদ্র মানুষগুলো আরও দরিদ্র হচ্ছে। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বায়নের ফলে সব সুযোগ-সুবিধা ও মুনাফার বেশিরভাগই ভোগ করছে ধনী দেশ ও ব্যক্তি মালিকাধীন কোম্পানিগুলো। এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। জনগণের ট্যাক্সের টাকা জনগণের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে।

ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতির বিপর্যয় ঘটেছে এবং দরিদ্র মানুষের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া নিয়ে নানা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। করোনা আক্রান্ত হলে তারা কিভাবে সেবা পাবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরির পাশাপাশি যাদের করোনা হয়নি কিন্তু অন্য জরুরি স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনে তাদের পরিস্থিতি আরও সংকটপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহসহ করোনা ভ্যাকসিন সবার জন্য নিশ্চিত করতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের দিক নির্দেশনায় খাদ্য নিরাপত্তা কার্যক্রম ও নীতি নির্ধারণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান এস এম মঞ্জুর রশিদ। তিনি বলেন, যারা চাকরি হারিয়েছে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা ও অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা প্রক্রিয়া চালু করায় প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের মোবাইল, ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

Advertisement

সভায় গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সব ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। বিশেষ করে মজুরি ও নারীর প্রতি বৈষম্য কমানো, দেশীয় কর রাজস্ব সচল, ধনী ব্যক্তি ও কোম্পানির প্রতি অন্যায্য কর মওকুফ বন্ধ, ধনী ব্যক্তি ও কোম্পানির ন্যায্য ভাগ পরিশোধ, সবার জন্য সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত এবং করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

এইচএস/এআরএ/এমকেএইচ