স্বাস্থ্য

অসংক্রামক রোগে বছরে ৫ লাখ লোকের মৃত্যু

দেশে প্রতি বছর পাঁচ লাখ নারী-পুরুষ ও শিশু অসংক্রামক রোগে মারা যায় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে আয়োজিত এক জাতীয় কর্মশালায় এ তথ্য জানান তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বছরে যে ৮ লাখ ৩৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, তার মধ্যে ৬২ শতাংশই মারা যায় অসংক্রামক রোগে।  ডা. আবুল কালাম আজাদ আরো বলেন, অসংক্রামক ব্যাধিজনিত মৃত্যুর অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতি সাধারণ মৃত্যুর ক্ষতির তুলনায় অনেক বেশি।  আক্রান্ত ব্যক্তিরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের অর্জিত শিক্ষাগত ও পেশাদারি দক্ষতা সমাজ ও পরিবারের কাজে লাগানোর আগেই মারা যান। আর্ক ফাউন্ডেশন ও কমডিস-এইচএসডির সহযোগিতায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ ইউনিট ‘স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন স্তরে অসংক্রামক ব্যাধির নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণ ও পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে।স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, সচেতনতা, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন পদ্ধতি পরিবর্তন এবং প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা অসংক্রামক ব্যাধিজনিত অকালমৃত্যু থেকে বাঁচাতে পারে বহু জীবন। তারা বলেন, নিয়মিত ব্যায়াম করলে, লবণ, চিনি ও অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ কমালে এবং স্বাস্থ্যসম্মত জীবন প্রণালী মেনে চললে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার ও কিডনি রোগের মতো অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ করা এবং এসবজনিত মৃত্যুহার কমানো যায়।কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হুসেন এবং আর্ক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. রুমানা হক। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও স্থূলতার প্রবণতাসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে একটি পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। তারা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের প্রয়োজন অসংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ ও চিকিৎসা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মাধ্যমে এসব রোগজনিত অকালমৃত্যুর হার ২০৩০ নাগাদ এক-তৃতীয়াংশ কমানো সম্ভব। অসংক্রামক ব্যাধিজনিত অকাল মৃত্যুর হার কমানোর লক্ষ্যে কর্মশালায় আরো কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশগুলো হলো- অসংক্রামক ব্যাধি বিষয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ; চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষিত করা এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন; এসব রোগের ওষুধের যোগান বাড়ানো; রোগীদের রেকর্ড সংরক্ষণ; কার্যকর রেফারাল ব্যবস্থা গড়ে তোলা: প্রয়োজনীয় ফলোআপের জন্য চিকিৎসা কার্ড ব্যবস্থা প্রবর্তন করা; প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষাক্রমে অসংক্রামক ব্যাধি বিষয়টিকে অন্তর্ভূক্ত করা; এবং প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে গবেষণা অব্যাহত রাখা। এমইউ/এসকেডি/আরআইপি

Advertisement