বিশেষ প্রতিবেদন

হোসনি দালানে ফেঁসে যাচ্ছে জামায়াত-শিবির

হোসনি দালানের তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্র শিবিরের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তদন্ত কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, দারুস সালামের এএসআই ইব্রাহীম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক জামায়াত কর্মীর তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর কামরাঙ্গীর চর থেকে গ্রেনেডসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে পুলিশ। হোসনি দালান থেকে উদ্ধারকৃত গ্রেনেডের ক্লিপসহ যেসব আলামত পাওয়া গেছে সেগুলোর সঙ্গে উদ্ধারকৃত আলামতের মিল রয়েছে। সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে জামায়াতের কোনো নেতার নির্দেশেই এই হামলা করা হয়েছে। এ বছরের ২৩ অক্টোবর তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় তিনটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে হোসনি দালানে। এ ঘটনায় ২ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটস (আইএস) বোমা হামলার দায় স্বীকার করলেও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন পুলিশ ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শেখ মারুফ হাসান বলেন, ‘হোসনি দালানের বিস্ফোরকের মিল পাওয়ায় এ দু’টি ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ এ বিষয়ে ডিবি পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাশরুকুর রহমান খালেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘তদন্তে অনেকখানি এগিয়েছে। অনেক ক্লু পাওয়া গেছে। আসামিদের শনাক্তও করা হয়েছে। তবে তাদের সঠিক নাম-পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।’ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম, ‘ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে। অপরাধীদের ধরতে ইতিমধ্যে বিশ্বস্ত গুপ্তচর নিয়োগ করেছে পুলিশ।’ বোমা হামলার সময় হোসনি দালানের সীমানা প্রাচীরের ভেতর ৩২টি সিটি ক্যামেরা বসানো ছিল। বোমা হামলার স্থানগুলোও সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত ছিল। আসামি শনাক্তও হয়েছে। তবে ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যাকাণ্ডের মতো এই হামলার পেছনের ‘বড় ভাই’দের খোঁজও করছে পুলিশ। তদন্ত সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে বোমা হামলাকারীদের শনাক্তের কাজ শেষ হয়েছে। শনাক্তকৃতরা জামায়াতের থানা পর্যায়ের কর্মী। তাদের গ্রেফতারের পরেই জানা যাবে জামায়াতের কোন পর্যায়ের নেতারা এ ঘটনায় জড়িত ছিল। তবে হোসনি দালান কিংবা এএসআই ইব্রাহীম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী কিংবা শিবিরের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছে জামায়াত। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘সব ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের গন্ধ খুঁজে বেড়ানো সরকারের নিয়মিত কাজের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের উপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে জামায়াতের রাজনীতির ধারাকে থামিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। জামায়াত কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত নয়।’ এআর/এএম/এসএইচএস/পিআর

Advertisement