দেশজুড়ে

মণিরামপুরে আ.লীগের ৭ মেয়র প্রার্থী, বিএনপির একক

পৌর নির্বাচনের ডামাডোলে সরব হয়ে উঠেছে যশোরের মণিরামপুর পৌর এলাকা। প্রার্থীদের পদাচরণা আর ভোটারদের আলোচনা সমালোচনায় জোর হাওয়া লেগেছে নির্বাচনের পালে। এখানে আওয়ামী লীগের ৭ মেয়র প্রার্থী আলোচনায় রয়েছেন। অপরদিকে মাঠে রয়েছেন বিএনপির একক প্রার্থী। তবে বিএনপিতেও রয়েছে অন্তর্দ্বন্দ্ব। আর জামায়াতও থাকছে না তাদের সঙ্গে। তারাও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিয়েছে। তাই এ পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে নানামুখি মেরুকরণের বিষয়টি উল্লেখ করছেন প্রার্থী ও ভোটাররা। মণিরামপুর পৌর এলাকা ঘুরে ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মণিরামপুর পৌরসভার মেয়র পদে বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা প্রভাষক ফারুক হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান, জাতীয় শ্রমিকলীগের জেলা সহ-সভাপতি বাবুল করিম বাবলু, সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারী ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ গাজী, আওয়ামী লীগ নেতা জিএম মজিদ, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএম নজরুল ইসলাম ও জেলা বাস্তুহারা লীগ নেতা এসএম লুৎফর রহমান। তবে জামায়াত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বললেও এখনও প্রার্থী নির্ধারণের পদক্ষেপ দেখা যায়নি।পৌরবাসী আরও জানান, মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি বর্তমান পৌর মেয়র শহীদ ইকবাল হোসেন ইতোমধ্যে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন। বিএনপির একক দলীয় প্রার্থী হিসেবে দায়িত্বশীল অনেকেই তার মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মকবুল ইসলাম জানান, দল নির্বাচনে গেলে আগামী পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে শহীদ ইকবাল হোসেন এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত। তবে দলের অভ্যন্তরে এ নিয়ে বিরোধও রয়েছে। বিগত উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শহীদ ইকবালের বিরুদ্ধে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মুছার নেতৃত্বে পৃথক একটি বলয় সৃষ্টি হয়েছে। একারণে বিএনপির শ্রমিক দলের ব্যানারে মুছার নেতৃত্বাধীন অংশটি মাঝে মধ্যে পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচিও পালন করে আসছে। পৌর বিএনপির সভাপতি খায়রুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী পৌর নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ার বিষয়টি শোনা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে দল নির্বাচন করলে বিএনপির সকল স্তরের নেতাকর্মীসহ জোট ভিত্তিক নেতাকর্মীরা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন করবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।আর নাগরিকদের মধ্যেও দু’বার নির্বাচিত শহীদ ইকবালকে নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। অনেকের মতে, ১৯৯৭ সালে মণিরামপুর পৌরসভা গঠিত হলেও অবকাঠামোগত তেমন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এছাড়া পৌরবাসীর নাগরিক সুযোগ সুবিধার দিকেও পৌরসভার দৃষ্টি কম। এ প্রসঙ্গে মণিরামপুর বাজার কমিটির সভাপতি অরুন কুমার নন্দনের প্রত্যাশা যিনি আগামী পৌর নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হবেন তিনি যোগাযোগ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পানি নিষ্কাশন, পানি সরবরাহের ব্যবস্থাসহ নানাবিধ উন্নয়নমূলক কাজ করবেন। নির্বাচনী মাঠে বিএনপির একক প্রার্থী থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের অন্তত ৭ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা প্রভাষক ফারুক হোসেন প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান, জাতীয় শ্রমিকলীগের জেলা সহ-সভাপতি বাবুল করিম বাবলু, সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারী ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ গাজী, আওয়ামী লীগ নেতা জিএম মজিদ, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএম নজরুল ইসলাম ও জেলা বাস্তুহারা লীগ নেতা এসএম লুৎফর রহমানের নাম আলোচনায় রয়েছে। এরাও কমবেশি প্রকাশ্যে গোপনে জনসংযোগ শুরু করেছেন। তবে দলীয় ব্যানারে নির্বাচন করতে হলে নৌকা প্রতীক নিশ্চিত করতে হবে-বুঝতে পেরে প্রার্থীরা গণসংযোগের চেয়ে এখন হাইকমান্ডের দিকেই বেশি নজর দিচ্ছেন। উপজেলা-জেলা হয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে কীভাবে নৌকা প্রতীক বাগানো যায় সে প্রচেষ্টায় ব্যস্ত সময় কাটছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসান বলেন, দলীয় নেতাকর্মী ও নীতিনির্ধারকরা যদি মনে করেন তিনি প্রার্থী হলে নির্বাচনে জয়ী হবেন, তাহলে তিনি ভোটের লড়াইয়ে থাকবেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এবার আওয়ামী লীগ থেকে যেই মনোনয়ন পাবেন তার বিজয় নিশ্চিত।এদিকে, বসে নেই জামায়াতও। তারাও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা ভাবছে। কারণ এখানে বিএনপির সঙ্গে তাদের বিরোধ রয়েছে। বিগত উপজেলা নির্বাচনে মণিরামপুরে বিএনপি ও  জামায়াত উভয়ই প্রার্থী দিয়েছিল। বিএনপির কারণে জামায়াত প্রার্থী অ্যাড. গাজী এনামুল হক পরাজিত হন। এমনই বক্তব্য দলটির নেতাকর্মীদের। ওই নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির নানামুখি ষড়যন্ত্রে নাখোশ জামায়াত। যে কারণে এবার মণিরামপুর পৌরসভার মেয়র পদে জামায়াতে ইসলামও কেন্দ্রীয়ভাবে প্রার্থী দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উপজেলা জামায়াতের আমির ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক ফজলুল হক জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে প্রার্থী দেবার সিদ্ধান্ত হলেও কাকে প্রার্থী করা হবে তা সময়মতো মিডিয়াকে জানানো হবে।মণিরামপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার সৈয়দ আল এমরান জানিয়েছেন, মণিরামপুর পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ হাজার ৩২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৭০৮ এবং মহিলা ভোটার ৯ হাজার ৬১৩ জন। এমএএস/আরআইপি

Advertisement