জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসের কোথাও নেই ময়লা ফেলার নির্ধারিত জায়গা বা ডাস্টবিন। ফলে যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকে ময়লা-আবর্জনা। যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবে ক্যাম্পাসের যেখানে-সেখানে জমছে আবর্জনার ছোট ছোট স্তূপ। প্রশাসনের চরম উদাসীনতায় ১৫ একরের এই ছোট ক্যাম্পাসটির অবস্থা চরম অস্বাস্থ্যকর।
Advertisement
অস্থায়ীভাবে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় স্তুপ করে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়। এমনই একটি জায়গা হলো কাঁঠালতলা। সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আবর্জনায় খাবারের খোঁজে ঘুরঘুর করে কাক আর কুকুরের দল। এই প্রাণীগুলোর মাধ্যমে ময়লা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসে।
এই জায়গাটি ছাড়াও ক্যাম্পাসের প্রায় সব জায়গাতেই পড়ে থাকতে দেখা যায় প্লাস্টিক বর্জ্য। নতুন একাডেমিক ভবন, ক্যাফেটেরিয়া, শহিদ মিনার, বিজ্ঞান অনুষদসহ প্রায় সর্বত্রই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কাগজের টুকরো, প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন।
এসব আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।
Advertisement
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাবিউল হাসান বলেন, ‘ক্যাম্পাসের কোথাও নির্দিষ্ট ময়লা ফেলার স্থান নেই বলে বাধ্য হয়েই প্লাস্টিকের কাপ, প্যাকেট, পানির বোতল এখানে-সেখানে ফেলে আসতে হয়। ক্যাম্পাসের আয়তন ছোট হওয়ায় এই ময়লাগুলো আরও বেশি করে চোখে পড়ে। তাছাড়া পরিবেশও নষ্ট হয়। ক্যাম্পাসের পরিবেশ সুন্দর করতে ময়লা ফেলতে নির্দিষ্ট স্থানে পাত্র বা ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হোক।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে নিয়মিত পড়াশোনা করেন শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের আশিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করি কিন্ত লাইব্রেরির পাশেই ময়লা আবর্জনার ভাগাড়। ফলে দুর্গন্ধের জন্য আমাদের পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। প্রশাসন চাইলেই ছোট এই ক্যাম্পাসে ডাস্টবিন বা পাত্রের ব্যবস্থা করতে পারে। আমরা চাই আমাদের ক্যাম্পাসের পরিবেশ সুন্দর রাখতে, কিন্ত প্রশাসনের এ বিষয়ে কোনো সাহায্য পাচ্ছি না।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড.মল্লিক আকরাম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি এবং প্রত্যক্ষদর্শী। আমরাও ক্লাস নেয়ার সময় দুর্গন্ধের কারণে ক্লাস নিতে পারি না। প্রশাসন চাইলেই ক্যাম্পাসকে খুব সুন্দর রাখতে পারে। আমি নিজেও প্রশাসনকে ক্যাম্পাসের পরিবেশ সুন্দর রাখার জন্য ডাস্টবিন বসানোর পরামর্শ দিয়েছি । যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার কারণে পরিবেশ তো নষ্ট হচ্ছেই, এসব দুর্গন্ধে বায়ুদূষণ চরম মাত্রায় বেড়ে যায়। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাস পর্যবেক্ষণ করেছি। ক্যাম্পাসে যত্রতত্র ময়লা ফেলার কথা সত্য। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ভবনের ছাদে থাকা ময়লা, গাছ ইত্যাদি পরিষ্কার করিয়েছি। পাশাপাশি ময়লা যাতে যত্রতত্র না ফেলা হয় তার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
Advertisement
ক্যাম্পাসে বিন না থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি এ ব্যপারে ভিসি, ট্রেজারার স্যারের সঙ্গে কথা বলে ফান্ড চাইব। তারা ফান্ড দিলে বিন বসানোর ব্যবস্থা করব।’
রায়হান আহমেদ/এসএস/জেআইএম