রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘এ’ ও ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সাত দিন পার হলেও এখনো করা হয়নি ফল প্রকাশ। এ নিয়ে ভর্তিচ্ছুসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।গত ৯ নভেম্বর স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘এ’ ও ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ভর্তি পরীক্ষা চলে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু এ পর্যন্ত একটি ইউনিটের ফলও প্রকাশ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষার্থী মো. শাকির আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, গত বছরে ১৯ তারিখের পরীক্ষার ফল ২৩ তারিখ প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এ বছর ৯ নভেম্বর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সাত দিন পার হতে চললেও এখনো ফল প্রকাশ করা হয়নি। তাহলে এখানে নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা আছে। দিনাজপুরের মৌ আক্তার নামের এক অভিভাবক জাগো নিউজকে বলেন, পরীক্ষার এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো রেজাল্ট হচ্ছে না। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ১/২ দিন পরে রেজাল্ট হয়। সেখানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টি অপ্রত্যাশিত।ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান রানা বলেন, আমার এলাকা থেকে কয়েকজন ছোটো ভাই এখানে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে। তারা ফোন দিয়ে জানতে চায় ফল প্রকাশ করেছে কি না। তাই আমাকে প্রায় প্রতিদিনই একবার করে খোঁজ নিতে হয়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় এতো সময় নেয় না।এ বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক খন্দকার ফরহাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আসলে এটা করতে সময় লাগে। একটা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে এতো তাড়াহুড়া করলে তো হয় না। ইতোমধ্যে আমরা ওএমআর সিটগুলো স্ক্যানিং করতে শুরু করেছি। বুধবার ‘এ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।তবে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ‘বি’ ইউনিটভুক্ত আইন অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ ফোন রিসিভ করেননি।ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকেও বিভিন্ন ধরনের কমেন্ট দেখা যায়। Akteruzzaman Rony নামের একজন ফেসবুকে কমেন্ট করেন, `বিশ্ববিদ্যালয়ের এতো অলসতা কিসের বুঝতে কষ্ট`। Osthir Masud Rana লিখেন, `তারা নিজের ঢোল নিজে পেটায় ডিজিটাল ভার্সিটি বলে`। Sonia Rahman Nisa লেখেন,‘আশা করি রেজাল্ট আর পাবো না’। বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এন্তাজুল হক জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এর আগে কোনো ওএমআর মেশিন ছিল না। এবার এটা বিশ্ববিদ্যালয় কালেক্ট করেছে। আর এটা প্রথম বার তাই প্রসেসিং করতে সময় লাগছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের এক্সপার্টের বেশ অভাব রয়েছে। তাই রেজাল্ট দিতে দেরি হচ্ছে। তবে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব রেজাল্ট দেয়া হবে বলে জানান তিনি।ভর্তি পরীক্ষা শুরু ৯ নভেম্বর হওয়ার পর এক সপ্তাহ পার হলেও এটাকে বিলম্বিত মনে করছেন না কম্পিউটার সেন্টারে প্রশাসক প্রফেসর খাদেমূল ইসলাম মোল্যা। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, পরীক্ষা ৯ তারিখে শুরু হলেও তা শেষ হয়েছে ১২ তারিখে। তো এই পরীক্ষা নেয়ার মধ্যে কেউ কি রেজাল্ট তৈরি করেছে? তবে দেশের অন্যান্য প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তুলনামূলক তাড়াতাড়ি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় বলে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমরা ভালো করে দিচ্ছি তাই দেরি হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, মঙ্গলবার থেকে রেজাল্ট দেয়া শুরু হবে। সুষ্ঠুভাবে রেজাল্ট দেয়ার জন্য আমাদের দেরি হচ্ছে।রাশেদ রিন্টু/এমজেড/আরআইপি
Advertisement