রাজনীতি

ধরপাকড়ে ঘরছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীরা

দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় অভিযান শুরু হয়েছিল। তবে সেই প্রবণতা হঠাৎ বেড়ে গেছে। ফলে ঘরবাড়ি ও এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছন দলটির নেতাকর্মীরা। দলীয় সূত্রে এমটাই জানা গেছে।এদিকে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের সংবাদে উদ্বিগ্ন দলের হাইকমান্ডও। বিষয়টকে কিভাবে মোকাবেলা করা যায় সেটি নিয়েও নানা কৌশল অনুসন্ধান করছেন তারা। পাশাপাশি সবমিলিয়ে দলটির কত জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে তা লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অবহিত করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।সর্বশেষ রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত সারা দেশে বিএনপি ও জামায়াতের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা সবাই নাশকতার মামলার আসামি।অনুসন্ধানে জানা যায়, ২৯ জেলার মধ্যে যশোরের আট উপজেলায় সর্বোচ্চ ৩৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপি-জামায়াতের নেতারা পালিয়ে বেরাচ্ছেন।এছাড়া সাতক্ষীরায় ৩৫৮, লক্ষ্মীপুরে ৩৪২, নোয়াখালীতে ৩১৯, গাইবান্ধায় ১৬৯, বগুড়ায় ১৫০, খুলনায় ১১৫, ফরিদপুরে ৭৩ ও নীলফামারীতে ৭২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য ২০ জেলায়ও কমবেশি গ্রেফতার হয়েছে।দেশের বেশ কয়েকটি জেলা থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যারা সক্রিয়ভাবে জড়িত এরকম বেশিরভাগ নেতাই নিজেদেরকে গোপন করার চেষ্টা করছেন। গ্রেফতার এড়াতে ঘরবাড়ি ছেড়ে অনত্র চলে গেছেন অনেকে।তারা আরো জানিয়েছেন, ধরপাকড় অভিযানের কারণে বিএনপির দল পুর্নগঠন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহীরাও দৌড়ের ওপর রয়েছেন। নিজেদেরকে রক্ষার কৌশলেই আপাতত ব্যস্ত রয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা।এদিকে ধরপাকড়ের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ নির্মূল না করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর ধরপাকড়ের যে নীতি সরকার গ্রহণ করেছে তা ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।এ বিষয়ে দলের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, নেতাকর্মীদেরকে আটক রেখে বিদেশি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপির সম্পৃক্ততা প্রমাণ করতে আইন- শৃঙ্খলা বাহিনী নানারকম চাপ প্রয়োগ করছে।সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সংকটের সমাধান হবে উল্ল্যেখ করে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক এসব মামলায় আটক নেতাকর্মীদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানান তিনি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, প্রতিপক্ষের সম্ভাব্য প্রার্থীদের এভাবে আটক রেখে নির্বাচন করলে তা হবে তিন সিটি কর্পোরেশনের মতোই প্রহসনের। তা হবে আরেকটি অর্থহীন নির্বাচন।দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা রাখতে শিগগিরই জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচন দরকার বলে মনে করেন তিনি। এমএম/জেডএইচ/আরএস/এমএস

Advertisement