ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতীর এক মামলায় জামিন বাতিল চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে নিম্ন আদালতে একটি মামলায় রাশেদুল হক চিশতিকে দেয়া জামিনের রায় হাইকোর্টেও বহাল থাকল।
Advertisement
এক মামলায় জামিন মঞ্জুর করে নিম্ন আদালতের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে দুদকের করা রিভিশন আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দীন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে এদিন দুদকের পক্ষে শুনানি করেন মো. খুরশিদ আলম খান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনির, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহরিয়ার কবির ও সিনিয়র আইনজীবী এ এফ এম হাসান আরিফ।
আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
Advertisement
এদিকে, দুদকের আইনজীবী মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান জাগো নিউজকে বলেন, রাশেদ চিশতির জামিন বাতিলে চেয়ে ৫ টি রিভিশন আবেদনের ওপর শুনানির জন্যে হাইকোর্টের কজলিস্টে ছিলো। আজ একটির বিষয়ে আদেশ দিলেন আদালত।
আইনজীবীদের তথ্যমতে, রাশেদ চিশতীর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে গত বছর ১৮ ও ১৯ মে ঢাকার আদালত থেকে চারটি মামলায় জামিন পান তিনি। টাঙ্গাইলের দায়রা আদালত থেকে আরেকটি মামলায় গত বছরের ২৭ মে জামিন পান তিনি।
পাঁচ মামলায় রাশেদ চিশতীর জামিনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে পৃথক আবেদন করে দুদক। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ মে একটি মামলায় হাইকোর্ট রাশেদ চিশতীর জামিন দুদকের আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেন। অন্য তিনটি মামলার ক্ষেত্রে হাইকোর্ট শর্তসাপেক্ষে রাশেদ চিশতীকে নিম্ন আদালতের দেয়া জামিন বহাল রাখেন।
ফারমার্স ব্যাংকের বকশীগঞ্জ শাখা থেকে ৯ কোটি ২৮ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল সদর থানায় রাশেদ চিশতীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলাটি করে দুদক। এই মামলায় গত বছরের ২৭ মে টাঙ্গাইলের বিশেষ জজ আদালত থেকে জামিন পান তিনি।
Advertisement
আইনজীবীদের তথ্যমতে, ফারমার্স ব্যাংকে জালিয়াতির ঘটনায় পৃথক মামলা করে দুদক। এর মধ্যে ১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকটির নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী, তার স্ত্রী রুজী চিশতী ও ছেলে রাশেদুল হক চিশতীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল গুলশান থানায় একটি মামলা করে দুদক।
এই মামলায় ১৯ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ থেকে জামিন পান তিনি। এর বিরুদ্ধে দুদক হাইকোর্টে আবেদন করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০ মে প্রথমে হাইকোর্টের অপর বেঞ্চ ২৮ মে পর্যন্ত রাশেদ চিশতীর জামিন স্থগিত করেন। পরে ২৮ মে আপিল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত রাশেদের জামিন স্থগিত করা হয়।
এছাড়া জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন, মাহবুবুল হক চিশতীকে আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনে সহযোগিতার অভিযোগ, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও দুদক আইনে রাশেদ চিশতীর বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা রয়েছে।
এফএইচ/জেআইএম