অর্থনীতি

ট্যানারি স্থানান্তরে ডেট লাইন ৩১ ডিসেম্বর

চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর মধ্যে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি কারখানা স্থানান্তরের ডেট লাইন দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। এ সময়রে মধ্যে যারা স্থানান্তর করবে না তাদের প্লট বরাদ্দ বাতিল করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি করেছেন তিনি। মঙ্গলবার শিল্পমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ট্যানারির মালিক নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।আদালতের নির্দেশনার আলোকে ৩১ ডিসেম্বরের পর হাজারিবাগের ট্যানারিগুলোতে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ সব ধরনের ইউটিলিটি সার্ভিসও বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানান শিল্পমন্ত্রী।তিনি বলেন, পরিবেশগত কারণে বিদেশিরা চামড়া কিনছে না। তাই ট্যানারি কারখানা স্থানান্তরের প্রতি বিশেষ তাগিদ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।সভায় জানানো হয়, ডিসেম্বরের মধ্যেই চামড়া শিল্পনগরিতে নির্মাণাধীন কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) দুটি মডিউলের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এর মাধ্যমে প্রায় ১শ’ ট্যানারির বর্জ্য পরিশোধন করা যাবে। এ সময় প্রয়োজনীয় বর্জ্য পেতে হলে কমপক্ষে ৭০টি ট্যানারি চালু থাকতে হবে। দ্রুত ট্যানারি স্থানান্তরের জন্য ইতোমধ্যে ১০৭টি ট্যানারিকে ২০ শতাংশ এবং ০৪টি ট্যানারিকে ৬০ শতাংশ ক্ষতিপূরণের অর্থ দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে ট্যানারি স্থানান্তরের পাশাপাশি সিইটিপি নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করতে সভায় সংশ্লিষ্ট সকলকে তাগিদ দেয়া হয়।সভায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাজারিবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তরের বিষয়ে ট্যানারি সংগঠনের নেতারা শিল্পমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন।সভায় শিল্পসচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বিসিক চেয়ারম্যান আহমদ হোসেন খান, বাংলাদেশ ফিনিস লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুট ওয়্যার এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়অর এম আবু তাহের, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান মো. শাহিন আহমেদসহ ট্যানারি শিল্প উদ্যোক্তা সংগঠনের নেতা, বিসিক, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বুয়েট, সিইটিপি নির্মাণকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ, উচ্চ আদালতের নির্দেশে পরিবেশ দূষণের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার ২০০৯ সালে হাজারীবাগের চামড়া শিল্প স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়। এ জন্য কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) আওতায় সাভারে চামড়া শিল্প নগরী গড়ে তোলা হয়। কিন্তু ট্যানারি মালিকদের অনীহা ও একের পর এক অজুহাতের কারণে কারখানাগুলো সাভার শিল্প নগরীতে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি। ফলে এটা নিয়ে সরকার এক ধরনের অস্বস্তিতে রয়েছেন।

Advertisement

এছাড়া চামড়া শিল্পকে পরিবেশবান্ধব করাসহ প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতে ইউরোপীয় ক্রেতাদের দিক থেকেও ওই এলাকায় ট্যানারি কারখানাগুলো স্থানান্তরের চাপ রয়েছে। এমনকি পরিবেশবান্ধব পরিকল্পিত শিল্পের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে রফতানি নিষেধাজ্ঞারও আশঙ্কা রয়েছে। যে কারণে ট্যানারি কারখানাগুলো স্থানান্তর জরুরি বলে মনে করছে সরকার।এসআই/আরএস/পিআর