যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো ভেন্টিলেটর সাপোর্টে থাকা রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার হসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪ হাজার ৭৬ জন রোগীকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
Advertisement
করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ের চেয়ে এই সংখ্যা অনেক বেশি। গত এপ্রিলে দেশটিতে প্রথম দফায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে ছিল ৩ হাজার ৩০১ জন।
এদিকে, দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে। শনিবার দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩৩ হাজার ৫৫২ জন এবং মারা গেছে ১ হাজার ৩৪৮ জন।
ডাউনিং স্ট্রিট থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা প্যাট্রিক ভ্যালেন্স বলেন, ‘মৃত্যুহার ভয়াবহ ভাবে বাড়ছে এবং এটা স্থায়ী হতে চলেছে। আমি এ বিষয়ে ভীত হয়ে পড়েছি।’
Advertisement
সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গুরুতর রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রতি ১০ জন রোগীর মধ্যে একজনকে ইন্টেন্সিভ কেয়ারে সেবা দিতে হচ্ছে।
রয়্যাল লন্ডন হাসপাতালের ১৫ তলা ভবনের ১২ তলাতেই কোভিড রোগী দিয়ে পূর্ণ এবং হাসপাতালের স্টাফদের রীতিমত লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
নিজের স্ত্রীকে হারানো মার্টিন ফ্রিবর্ন লোকজনকে এই ভাইরাস থেকে নিরাপদে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন না যে কি ঘটতে পারে। কেউ এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে চায় না। সবকিছু এভাবে হারাবেন না।’
গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে প্রায় প্রতিদিনই ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সে সময় ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছিল ১ হাজার ৩৬৪ জনকে। এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৬ জনে।
Advertisement
এদিকে, সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া করোনার নতুন ধরন নিয়ে সতর্ক করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেছেন, করোনার নতুন ধরনটি আগের ধরনের চেয়ে আরও বেশি প্রাণঘাতী হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তবে এ বিষয়ে এখনও অনেক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এছাড়া দেশজুড়ে ভ্যাকসিন কার্যক্রমও চলছে। যদিও ভ্যাকসিন কতটা কাজ করছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
করোনার পুরোনো এবং নতুন ধরনের মধ্যে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার গবেষণা করে নতুন নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্য থেকেই জানা যাচ্ছে যে, পুরোনো ধরনের চেয়ে নতুন ধরনের করোনাভাইরাসে বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যেই করোনার নতুন ধরনটি ছড়িয়ে পড়েছে। ডাউনিং স্ট্রিট থেকে দেওয়া এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী জনসন বলেন, দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে এই নতুন ধরনটির কারণে মৃত্যু হারও বেড়ে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। লন্ডন এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে প্রথম করোনার এই নতুন ধরনের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়।
টিটিএন/এমকেএইচ