নগ্ন
Advertisement
রাত্রির কাছে ফিরে যাবো মেয়ে
ফিরে যাবো মৈথুনে, নির্ঘুম জ্যোৎস্নায়
দীর্ঘপথ উড়ে উড়ে
Advertisement
দু’ দণ্ড দাঁড়াবো নিশ্চুপ
তোমার ঠোঁটের বারান্দা-ঘেঁষে একবার
জানি, মহুয়া বনে লেগে আছে গভীর চুম্বন
সাঁই-সাঁই উড়ছে প্রেয়সীর অবাধ্য চুল
Advertisement
অথচ অথৈ সাগরে চোখ পেতে দেখি
ভেসে যায় বেহুলার দেহ
সাথে অভাগা লখিন্দর, সাপে কাটা
আর কামুক মন আমার
রাত্রির কাছে ফিরে যাবো মেয়ে
ফিরে যাবো মৈথুনে, নগ্ন শুভ্রতায়...
****
পরিভ্রম
(স্নেহের নীলিমা রিমিকে স্মরণে রেখে)
অফুরান অবসরে এক এক করে পাতা ঝরে যাচ্ছে
হাওয়ায় দুলছে অলস গল্প, আঙুল থেকে মুছে যাচ্ছে পিয়ানোর পরশ
আমি বসে আছি উদোম, কোনো এক গানে—
শুনে যাচ্ছি ঝাউবন, মায়া বন বিহারিণী...
চোখ পেতে দেখি উচ্ছল এক নদী ফিরছে বাড়ি
বৃক্ষের গায়ে লেগে আছে প্রগাঢ় চুম্বন
আলাদীন গোপন রাখে ইচ্ছের দৈত্য, সমস্ত জাদুবল
আমিও রই গোপনে...
পার হয়ে সিন্ধুনদী, হেঁটে যাই নগরীর কোণে
জনারণ্যের প্রাচীর ভেঙে একলা দাঁড়াই—একা!
কেউ নেই, চারপাশে চৈত্রের মলিন হাহাকার
একটু দূরে এক এক করে অবসরে পাতা ঝরে যায়
আর আঙুলে লেপ্টে থাকে পিয়ানোর পরশ...
****
দেহভিটা
কথকের দাঁতে তোমার হাসিগুলো গেঁথে আছে স্থির
যত্নবান উঁইপোকাও শোনেনি সেইসব রাতের শীৎকার
যারা নুয়ে পড়েন অজস্র চেরীফুলের স্বপ্ন নিয়ে
অথবা রোদ হতে চাইতেন যেসব প্রেমিকযুগল
তাদের মৃত্যুতে জ্যোৎস্নারা আসেনি; কেবল
শীতল উন্মাদের মতো বৃষ্টির ট্রেনে
ভেসে এলো মুমূর্ষু গ্রাম, আততায়ীর রক্ত!
তখনো আলোর ফুৎকারে রাত হয়নি
দেহভিটায় আঁতকে ওঠেনি হাবিয়ার কষ্ট
তখনো আকাশ চিরে মাঝিরা জাগেনি
কেবল তুমিই প্রথম জেনেছিলে—
দিনেরা বেঁচে নেই। খুন হয়েছে নিঃশ্বাসগুলি...
****
মানুষ অথবা পাতার সংসার
পাতাদের জীবন থাকে না
তবু তার বৃক্ষের সংসার
হাওয়ায় দোল, বৃষ্টি মাখামাখি
এ জীবন কেবল উড়ে যাওয়া...
তীব্র্ ঝড় এলে নিয়ে যায় শরীর
কাঁপে পৃথিবী প্রলয়ে
কোথায় যাবে কেউ জানে না
বিচ্ছেদ শুধু বিষণ্ন ধুলো!
পাতাদের বৃক্ষও রাখে না
ঘুরপাক সময়ে ক্রমশ হলুদ দেহ
পতনের প্রতীক্ষা শেষে
অতঃপর মাটির কাছাকাছি
পায়ে পায়ে পিষ্ট জীবন...
বড় বিরূপ এ সময়
পাতাদের কেউ থাকে না
পাতাদের কেউ রাখে না।
এসইউ/এমকেএইচ