বছর দুয়েক আগে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে সৌদি আরবে পাড়ি জমান টাঙ্গাইলের কালিহাতীর শরিফুল ইসলাম (৩০)। কিন্তু প্রবাসে ৬-৭ মাস যেতে না যেতেই মস্তিষ্কের অসুখে পড়েন তিনি। মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তার চিকিৎসা শুরু করে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানটি। প্রায় একবছর ধরে প্রবাসের মাটিতে অসুখে ভুগে শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) দেশে ফিরেছেন তিনি।
Advertisement
শরিফুলের সুস্থতার জন্য প্রয়োজন ছিল দুই দফা অস্ত্রোপচারের। নিয়োগদাতাদের অর্থায়নে প্রথম ধাপের অস্ত্রোপচার হলেও সেজন্য পর্যাপ্ত সময় এবং সঠিক শুশ্রুষার প্রয়োজন ছিল। তাই দ্বিতীয় ধাপের অপারেশন দেশে করানোর সিদ্ধান্ত নেন নিয়োগদাতারা।
এদিকে, করোনা মহামারির মধ্যে অসুস্থতার কারণে তার কাগজপত্র নবায়ন করা সম্ভব হয়নি। ফলে তাকে দেশেও পাঠানো নিয়েও দেখা দেয় জটিলতা। আর অসুস্থতার প্রথমদিকে তার কোনো স্বজন বা দেশের কোনো ঠিকানাও পাচ্ছিল না নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান। একপর্যায়ে অসুস্থ শরিফুলকে দেশে পাঠাতে সহায়তা চাওয়া হয় রিয়াদে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে কর্মরত প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিকেল সেন্টারের কাছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে রাখা হয় সেখানকার সেফ হোমে।
এর আগেও বিপদগ্রস্ত প্রবাসীদের পাশে থেকে কাজ করে গেছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
Advertisement
মেডিকেল সেন্টারের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সহযোগিতা ও প্রবাসী সাংবাদিক আব্দুল হালিম নিহনকে সঙ্গে নিয়ে তাকে দেশে পাঠানোর উদ্যেগ নেন প্রতিষ্ঠানটির এমডি আবদুল্লাহ আল মামুন। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে ফ্লাইট জটিলতায় সেখানেও কালক্ষেপণ হতে থাকে। পাশাপাশি, অসুস্থ শরিফুলকে দেশে পাঠাতে গিয়ে দেখা দেয় নানা জটিলতা। সবকিছু ঠিকঠাক করতে লেগে যায় প্রায় ৬ মাস। এই পুরোটা সময় ধরেই তার দেখভাল করেছে ঢাকা মেডিকেল সেন্টারের সেফ হোমে।
এরপর সম্প্রতি তার দেশে ফেরার ফ্লাইট কনফার্ম হলেও রিয়াদ বিমানবন্দর থেকে ফিরে আসতে হয় তার আঙুলের ছাপজনিত জটিলতার কারণে। রিয়াদ দূতাবাসের লেবার উইংয়ের সহায়তায় বিষয়টির সমাধান করে সবশেষে তাকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে পরিবারের হাতে তুলে দেন আব্দুল হালিম নিহন।
দেশে ফিরতে পেরে অশ্রুসজল নয়নে তাকে সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও দোয়া করেন শরিফুল।
এসএস/জিকেএস
Advertisement