'কখনও ভাবিনি নিজের নামে এক টুকরো জমি হবে। ভেবেছিলাম স্বামী-সন্তানের সংসার নিয়ে এভাবেই একদিন চলে যাব। কিন্তু জীবনের শেষ সময়ে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া জায়গা ও ঘরের মালিক হইতাছি। ভাবতেই খুশি লাগে। ভগবান আপারে (শেখ হাসিনা) অনেক দিন বাছাইয়া রাখুক। আর আমাগো মতো গরীব মানুষের হেল্প (সাহায্য) করুক।'
Advertisement
রানী ত্রিপুরা (৪৮) প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাচ্ছেন জেনে পরম আনন্দে কথাগুলো বলছিলেন। স্বামী অর্জন ত্রিপুরা (৫৭) চোখে দেখেন না। লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বহরিয়ার বাসিন্দা তারা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে চাঁদপুরে ১১৫ গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার ঘর পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ঘরগুলো বরাদ্দ হয়েছে। রানী ত্রিপুরা ও অর্জন ত্রিপুরা দম্পতি ওই তালিকায় রয়েছেন।
পাঁচ সদস্যের সংসারে কখনও সুখের মুখ দেখেননি। দারিদ্র্যতায় কেটে গেছে তাদের জীবন। তাই শেষ বয়সে প্রধানমন্ত্রীর এই উপহার তাদের জন্য আর্শীবাদস্বরূপ জানালেন রানী ত্রিপুরা।
Advertisement
মেঘনা নদীর একেবারে তীর ঘেঁষে পাড়েই সামান্য একটু যায়গায় বসবাস করছেন এ দম্পতি। জায়গাটির মালিক কে তা জানা নেই তাদের।
রানী ত্রিপুরার স্বামী অন্ধ। কাজ করতে পারেন না। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে রিপন ত্রিপুরার বয়স ২২। বাবা-মায়ের সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই দীর্ঘদিন। কোনো খোঁজখবর রাখে না সে। ছোট ছেলে জয় ত্রিপুরা চাঁদপুর পুরান বাজারে নেটজাল তৈরির একটি কারখানায় কাজ করে। আপাতত সংসার চালায় ছোট ছেলে জয়।
তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ের নাম সীমা ত্রিপুরা, মেজো মেয়ের নাম বিউটি ত্রিপুরা আর ছোট মেয়ের নাম বৃষ্টি ত্রিপুরা। তিন মেয়েকেই বিয়ে দিয়েছেন। তারা স্বামীর বাড়িতেই থাকে।
শুক্রবার দুপুরে রানী ত্রিপুরার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে একা বসে সময় কাটাচ্ছেন তিনি। সাংবাদিক এসেছে জেনে খুবই খুশি।
Advertisement
ঘর পাওয়া প্রসঙ্গে রানী বলেন, নদীতে আমার বাবার বাড়ি তলিয়ে গেছে। তারপর থেকে এখানে থাকি। সব হারানোর পর জীবনে কখনও নিজের একটু জায়গা হবে সেটাও ভাবতে পারিনি। সরকার আমাগো মত গরীব মানুষের জন্য অনেক কিছুই করছে।
তিনি অরও বলেন, আমি আপারে (শেখ হাসিনা) অনেক ধন্যবাদ জানাই। আপায় অনেক বছর বেছে থাকুক দোয়া করি। আমার মত একজন মানুষের জন্য উনি ঘরের ব্যবস্থা করছেন। ভগবান উনার ভালা করব।
নজরুল ইসলাম আতিক/এএএইচ/এমএস