জাতীয়

মার্চে জয়িতা ফাউন্ডেশনের ১০তলা ভবনের নির্মাণ উদ্বোধন

আগামী মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জয়িতা ফাউন্ডেশনের ১০তলা ভবন নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

Advertisement

তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ এবং ব্র্যান্ডিং করার জন্য জয়িতা ফাউন্ডেশন গঠন করে সরকার। জয়িতা ফাউন্ডেশনের ১০তলা ভবন নির্মাণ কাজ আগামী মার্চ মাসে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে সিলেট শিল্পকলা অ্যাকাডেমি মিলনায়তনে সিলেট বিভাগের সফল ও আত্মপ্রত্যয়ী পাঁচজন শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমি মিলনায়তন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সিলেট বিভাগের জেলার মধ্য থেকে যে পাঁচজন শ্রেষ্ঠ জয়িতা হয়েছে তারা অনেক কষ্ট করে আজকের এই পর্যায়ে এসেছে- ফরিদা আক্তার চৌধুরী, নাসরিন আক্তার খানম, মন্দিরা রাণী ভট্টাচার্য, পারভীন আক্তার ও মোছা. ফরিদা পারভীন প্রতিটি জয়িতা সমাজের আলোকবর্তিকা। আপনাদের কষ্ট, ত্যাগ ও সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার অদম্য চেষ্টা অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। আর্থিকভাবে অন্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার কারণে আমাদের দেশে মেয়েরা পরিবার ও সমাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় পিছিয়ে আছে, যা নারী ও পুরুষের মাঝে ব্যবধান হ্রাসে বড় বাধা।

Advertisement

প্রতিমন্ত্রী জানান, আর্থিক সচ্ছলতা ও স্বাবলম্বিতা নারীকে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। আমাদের দেশের মেয়েরা শিক্ষায় এগিয়ে গেছে। এ জন্য শিক্ষার সঙ্গে তাদের আর্থিক উন্নয়ন করতে হবে। তবেই দেশে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন সুসংহত ও টেকসই হবে। এই যে আমাদের খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। যার ফলে এই করোনা মহামারিতেও বিশ্বে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অনেক বেশি। এর পেছনে রয়েছে কৃষি ও রফতানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণ। বৈশ্বিক মহামারিতে করোনার জন্য ঘরে বসে থেকেই নারীরা এখন ক্ষুদ্র পরিসরে উদ্যোক্তা হয়ে উঠছে। সরকারের ডিজিটাল সেবার বিপ্লবের কারণে অনলাইনের মাধ্যমে নারীরা এখন ক্ষুদ্র ব্যবসার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা কিন্তু জয়িতার একটি সাফল্য।

ফজিলাতুন নেসা বলেন, এখন দেশে নারীরা তাদের পরিবারে আর্থিক সাপোর্টের অনেকটাই সহায়তা করছেন। সমাজে নারীরা এখন আর বসে নেই। তারা কোনো না কোনোভাবে অর্থের সংস্থান হলেই কিছু একটা উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের নারীদের জন্য বাড়তি সুযোগের দরকার নেই। তাদের জন্য প্রয়োজন সুযোগের সমতা। আজ ই-কমার্সে নারীদের জয়জয়কার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল নারীরা পাচ্ছে। আমাদের দেশের নারীরা তাদের মেধা, প্রজ্ঞা, সৃজনশীলতা ও তথ্য-প্রযুক্তি দক্ষতার মাধ্যমে ই-কমার্সে বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। দেশে যত অনলাইন ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আছে তার শতকরা ৮০ ভাগ পরিচালনা করছে নারীরা।

সংবিধানে নারীর অধিকার ও জাতির পিতার উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপলব্ধি করছিলেন দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারীকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন সম্ভব নয়, সেজন্য তিনি নারী উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। জাতির পিতা সংবিধানের নারীর সমঅধিকার নিশ্চত করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত, অসহায় এবং নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসন ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে তিনি গঠন করেন নারী পুনর্বাসন বোর্ড। এদেশে নারী উন্নয়নের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় জাতির পিতার নেতৃত্বে ও নির্দেশনায়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব কাজি রওশন আক্তার বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে নারীদের রয়েছে অসামান্য অবদান। জয়িতারা সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।

Advertisement

আইএইচআর/এমআরআর