নিজের নামে পদ্মা সেতুর নামকরণের প্রস্তাবে নেতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য (গাজীপুর-৩) মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ সংসদে এ প্রস্তাব করলে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে হাত নেড়ে এবং পরে মাথা নেড়ে ‘না’ ‘না’ করেন। সংসদ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত অধিবেশন থেকে সেই দৃশ্য দেখা যায়।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সংসদের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ প্রস্তাব দেন। এরপর আওয়ামী লীগের আরেক সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথও প্রধানমন্ত্রীর নামে পদ্মা সেতুর নামকরণের প্রস্তাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি প্রস্তাব রাখতে চাই শেখ হাসিনার কাছে। এই জাতির মাধ্যমে এই জাতীয় সংসদের ৩৫০ জন সংসদ সদস্য যারা এই বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছেন, তাদের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই, এই সেতুর নাম শেখ হাসিনা সেতু হওয়া উচিত। এছাড়া আর কিছু হতে পারে না।’
এরপর বারবার প্রধানমন্ত্রী হাত নেড়ে অসম্মতি জানান। তারপরও এ বিষয়ে মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন তার বক্তব্য চালিয়ে যান। এরপর প্রধানমন্ত্রী সংসদে সভাপতিত্ব করা ডেপুটি স্পিকারের দিকে তাকান।
Advertisement
এরপর ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি জানি, আপনি উদার। আপনি মহানুভবতার মূর্তপ্রতীক। প্রেরণা কোনোদিন প্রকাশ্যে আসে না। প্রেরণা ভেতরে লালন করেন। অক্সিজেন নিজেকে জড়িয়ে অপরকে আলোকিত করে। আপনি নিজের নামেই পদ্মা সেতু করবেন। ইতোমধ্যে আপনি না করেছেন কিন্তু আমাদেরও দায়বদ্ধতা আছে।’
একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী অনেকটা বিরক্ত হয়ে বারবার মাথা নেড়ে ‘না’, ‘না’ করেন।
এরপরও তিনি বলতে থাকেন, ‘জাতীয় সংসদের ৩৫০ জন সংসদ সদস্যকে যদি জিজ্ঞেস করেন, সবাই সমস্বরে বলবেন আপনার নামে করার। নেত্রী, আপনি বড় হবেন না, আমাদের বড় হওয়ার সুযোগ দেন। আমরাও কৃতজ্ঞচিত্তে আপনার নামে নামকরণ করার মধ্য দিয়ে আমাদের দায়বদ্ধতা পূরণ করি। এই কারণে যে, আপনি সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা ও কারিগর।’
এরপর তার বক্তব্যের সময় শেষ হলে মাইক বন্ধ হয়ে যায়।
Advertisement
এরপর আওয়ামী লীগ দলীয় আরেক সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ বলেন, ‘দুনিয়ার সবচেয়ে খরস্রোতা নদী পদ্মায় বঙ্গবন্ধুকন্যার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে এই সেতু নির্মাণ করা। আমি আবারও দাবি জানাই, এই সেতুর নাম হবে দেশরত্ন শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু। প্রধানমন্ত্রী তার বিনয় দিয়ে হয়তো বারবার বলবেন, ‘না’। আমরা এই প্রজন্মের যারা মানুষ তারা অকৃতজ্ঞ নই, আমরা জানি যখন বিশ্বব্যাংক ফান্ড প্রত্যাহার করে নিল, পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন অন্তরায় সৃষ্টি হলো, বঙ্গবন্ধুকন্যা সাহস করে বললেন, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু বানাবো এবং তিনি এটা সম্ভব করেছেন মাত্র ১২ বছরে। পদ্মা সেতু আজ বাস্তবতা। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আজ বাস্তবতা। টানা ২০০ বছর দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ছয় কোটি মানুষ পাবে।
এইচএস/এআরএ/এমকেএইচ