বিয়ের জন্য উকিল বা অভিভাবক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ে পড়ানো থেকে শুরু করে সব কাজেই উকিল বা অভিভাবকের প্রয়োজন। কিন্তু উকিল ছাড়া কি বিয়ে হবে? আবার বিয়ের জন্য উকিল বা অভিভাবক হওয়ার শর্তই বা কী?
Advertisement
হ্যাঁ, বিয়ের জন্য অভিভাবক তথা উকিল নিযুক্ত থাকা আবশ্যক। কেননা উকিল বা অভিভাবক ছাড়া কোনো বিয়ে নেই বলে জানিয়েছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উকিল বা অভিভাবক ছাড়া যে নারী বিয়ে করবে তার বিয়েকে বাতিল বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। হাদিসে এসেছে-রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে নারী নিজেই নিজের বিয়ে সম্পন্ন করবে; তার বিয়ে বাতিল বাতিল বাতিল; অভিভাবক বা উকিল যদি ওই নারীর বিয়েতে বাধা সৃষ্টি করে। তবে যার উকিল বা অভিভাবক নেই, দেশের সুলতান (জনপ্রতিনিধি) সুলতান বা শাসক তার উকিল বা অভিভাবক হবে।' (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)
অভিভাবক হওয়ার জন্য শর্তসুতরাং বিয়ের জন্য যেমন উকিল বা অভিভাবক আবশ্যক তেমনি ৬ টি শর্তের আলোকে একজন ব্যক্তি উপযুক্ত অভিভাবক বা উকিল হতে পারবে। আর তাহলো-- বিয়ের উকিল বা অভিভাবক হতে হলে তাকে অবশ্যই আকল বা বিবেক সম্পন্ন হতে হবে। পাগল বা মস্তিষ্কবিকৃত হলে হবে না।- প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে। নাবালেগ বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোনো ব্যক্তি উকিল বা অভিভাবক হতে পারবে না।- বিয়ের জন্য অবশ্যই অভিভাবকবা উকিলকে স্বাধীন বা মুক্ত হতে হবে। পরাধীন বা ক্রীতদাস কখনো অভিভাবক বা উকিল হতে পারবে না।- বিয়ের উকিল বা অভিভাবককে অবশ্যই পুরুষ হতে হবে। কোনো নারীর জন্য বিয়ের অভিভাবক হওয়ার সুযোগ নেই।- যার বিয়ে হবে এবং যিনি অভিভাবক হবেন উভয়কেই একই দ্বীনের অনুসারি হতে হবে। অর্থাৎ কোনো মুসলিম ব্যক্তির বিয়ের সময় অভিভাবক অন্য ধর্মের হতে পারবে না। যেমন-- কোনো অবিশ্বাসী বা ভিন্ন ধর্মের অনুসারী কেউ কোনো মুসলিম নারীর অভিভাবক হতে পারবে না। আবার- আবার কানো মুসলিম ব্যক্তি কোনো অবিশ্বাসী নারীর অভিভাবকও হতে পারবে না।- যিনি উকিল বা অভিভাবক হবেন তাকে যোগ্য ও উপযুক্ত হতে হবে। অর্থাৎ বিয়ের জন্য কুফূ বা সমতা রক্ষার ক্ষেত্রে বিয়ের কল্যাণ-ক্ষতি সম্পর্কিত জ্ঞানের অধিকারী হওয়া আবশ্যক।
মনে রাখতে হবেবিয়ের অভিভাবক বা উকিল হতে হলে উল্লেখিত শর্তগুলো থাকতে হবে। এর কোনো একটি না থাকলে কেউ বিয়ের জন্য অভিভাবক বা উকিল হতে পারবে না। তবে অভিভাবক হওয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে দাদা, ভাই, চাচার ওপর অভিভাবক হওয়ার দায়িত্ব চলে আসবে। একান্তই যদি আত্মীয়দের মধ্যে কাউকে পাওয়া না যায় তবে দেশের মুসলিম শাসক কিংবা জনপ্রতিনিধি বিয়ের সময় অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করতে পারবে।
Advertisement
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, অভিভাবক হওয়ার আগে উল্লেখিত বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন নিজের মধ্যে আছে কিনা তা দেখে নেয়া। নতুবা যার মধ্যে এ গুণ ও যোগ্যতাগুলো আছে তাকে অভিভাবক নিযুক্ত করা। কেননা অভিভাবক বা উকিল ছাড়া কোনো বিয়ে হবে না।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে যথাযথ অভিভাবকত্বের মাধ্যমে হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী বিয়ে সম্পাদন করার তাওফিক দান করুন। উপযুক্ত অভিভাবক বা উকিল হতে উল্লেখিত শর্তের আলোকে নিজেদের গঠন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস
Advertisement