বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্বের শেষদিনে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা চার লাখ ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
Advertisement
এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মাসের পর মাস এই অবস্থান ধরে রেখেছে দেশটি। এখন পর্যন্ত কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ধারে-কাছেও নেই।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ৪২ লাখের বেশি। এর মধ্যে মারা চার লাখের বেশি মানুষ।
এদিকে, ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ৪৮ লাখ ৯ হাজার ৮৪১। এর মধ্যে মারা গেছে ৪ লাখ ১১ হাজার ৫২০ জন। ইতোমধ্যেই দেশটিতে সুস্থ হয়ে উঠেছে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮৬ হাজার ৮৮৬ জন। দেশটিতে বর্তমানে করোনার অ্যাক্টিভ কেস ৯৬ লাখ ১১ হাজার ৪৩৪। অপরদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে ২৮ হাজার ৪১৮ জন।
Advertisement
করোনা মহামারির প্রথম থেকেই এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি ট্রাম্প প্রশাসন। সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকলেও প্রশাসন কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অনেক দেশই যখন শুরু থেকেই কঠোর লকডাউন এবং বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে তখন ট্রাম্প ভিন্ন পথে হেঁটেছেন। তিনি করোনাকে একেবারেই পাত্তা দেননি। এমনকি তিনি নিজে এবং তার স্ত্রী-সন্তান করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরেও এ বিষয়ে তাকে তেমনভাবে গুরুত্ব দিতে দেখা যায়নি।
করোনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিপর্যস্ত পরিস্থিতির পুরো দায় ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের। আর এই দায় নিয়েই হোয়াইট হাউস ছাড়তে হচ্ছে তাকে। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে দেশে কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যুতেও সামান্যতম বিচলিত নন এই বিদায়ী প্রেসিডেন্ট।
বুধবার দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন জো বাইডেন। তিনি ক্ষমতা গ্রহণের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতোমধ্যেই করোনা-বিধ্বস্ত মার্কিন অর্থনীতির জন্য এক দশমিক নয় ট্রিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। কংগ্রেসে এই প্রণোদনা প্যাকেজ অনুমোদন হলে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবারগুলোর জন্য বরাদ্দ থাকছে এক ট্রিলিয়ন ডলার। যেখানে প্রত্যেক মার্কিনিকে সরাসরি দেয়া হবে এক হাজার ৪০০ ডলার করে। ত্রাণ প্যাকেজের আওতায় করোনা মোকাবিলায় খরচ করা হবে ৪১২ বিলিয়ন ডলার আর ছোট ব্যবসার থাকছে ৪৪০ বিলিয়ন ডলার।
Advertisement
এছাড়া করোনার টিকাদান কর্মসূচিকে আরও বেগবান করে তুলতে চান জো বাইডেন। সে লক্ষ্যে সিরিঞ্জসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের কাজে লাগানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।
টিটিএন/জেআইএম