শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য যেখানে গঠনমূলক বক্তব্য খুবই জরুরি সেখানে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে গ্রিক আর্চবিশপের ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য খুবই দুঃখজনক। গ্রিক আর্চবিশপের দেয়া আক্রোশমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক কর্তৃপক্ষ দিয়ানতের প্রধান আলী এরবাশ। গ্রিক মুসলমানরাও এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। খবর গ্রিক সিটি টাইমস, ডেইলি সাবাহ।
Advertisement
শনিবার এথেন্সে গ্রিক আর্চবিশপ দ্বিতীয় ইরোনিমস ওপেন টেলিভিশনকে দেয়া এক ভাষণে বলেন, ‘ইসলাম কোনো ধর্ম নয়, বরং এটি রাজনৈতিক দল। এর অনুসারীরা শুধু যুদ্ধের সাথেই সম্পৃক্ত।’
গ্রিক আর্চবিশপের এ বক্তব্যে বিশ্বব্যাপী ইসলামের অনুসারী মুসলিমরা মারাত্মকভাবে মর্মাহত হয়েছে। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দার ঝড় বইছে।
তুরস্কের দিয়ানত প্রধান আলি এরবাশ রোববার এক বিবৃতিতে এ বক্তব্যের প্রতি তীব্র নিন্দার পাশাপাশি খ্রিস্ট সমাজকে এ ধরনের ‘অসুস্থ মানসিকতার’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
Advertisement
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় নেতাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব শান্তি ও সহনশীলতার জন্য সংগ্রাম করা। তাদের উচিত সহাবস্থানের সংস্কৃতি গড়ায় অংশ নেয়া।
‘খ্রিস্ট বিশ্বের অবশ্যই এ ধরণের অসুস্থ মানসিকতার বিরোধিতা করা উচিত। কেননা গ্রিক আর্চবিশপের এ বক্তব্যের ফলে মুসলমানদের গুরুত্বহীন করে বর্ণবাদের শিকারে পরিণত করবে এবং তাদের জীবন ও প্রার্থনার স্থানকে হামলার মুখে ফেলবে বলেও উল্লেখ করেন এরবাশ।
তিনি বলেন, ‘আর্চবিশপের মন্তব্য সমাজকে উচ্ছৃঙ্খলতার দিকে উসকে দেবে। এর মাধ্যমে ইসলামের বিরুদ্ধে ঘৃণা, বৈরিতা ও সহিংসতার সৃষ্টি হবে।’
অবশেষে তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক কর্তৃপক্ষ দিয়ানতের প্রধান আলী এরবাশ বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামী সভ্যতা, ধর্ম- বিশ্বাস ও সংস্কৃতি শত শত বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন সংস্কৃতি ও সভ্যতার সঙ্গে একত্রে বসবাসের ঐতিহ্য সৃষ্টি করে আসছে।’
Advertisement
উল্লেখ্য ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এ অঞ্চলটি অটোমান সম্রাজ্যের দখলে ছিল। তাদের ক্ষমতাচ্যুতির পর দেশটিতে থাকা ইসলামিক ঐতিহ্য ও মসজিদগুলো ভেঙে ধ্বংস করে দেয়া হয়। গ্রিসে মুসলিমদের প্রতি যে কোনো ঘটনা অপ্রত্যাশিত নয়।
২০০০ সালের আগে অ্যাথেন্সে কোনো মসজিদও ছিল না। অথচ শুধু অ্যাথেন্সেই বসবাস করে প্রায় ৩০ হাজার মুসলমান। উনিশ শতকের শেষে অ্যাথেন্সে ২০০০ সালে সরকারিভাবে প্রথমবারের মতো মসজিদ নির্মিত হয়।
এমএমএস/এমকেএইচ