রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের অবকামঠামো ত্রুটিপূর্ণ দাবি করে তা আবার নতুন করে নির্মাণের দাবি জানিয়েছে রাবি কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীরা।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কৌশলে এই অপরিকল্পিত ও অকার্যকর অবকাঠামোটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। যা টিএসসিসির নীতিমালা অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়নি এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য যে সকল সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা এই ভবনটি দ্বারা সেগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। ১৯৮৪ সালের খসড়া প্রস্তাবের আলোকে টিএসসিসির যে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয় সে অনুযায়ী গত ২৮ অক্টোবর উদ্বোধনকৃত টিএসসির অবকাঠামোটি নির্মাণ না হওয়ায় নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণের দাবি জানানো হয়। এসময় লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রবীন্দ্র-নজরুল স্মরণে নামের একটি স্মরণিকাতে টিএসসিসির দুজন প্রশিক্ষক ‘শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বান্ধব ক্যাম্পাস এবং শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে। যাতে স্ষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়, প্রগতিশীল শিক্ষকদের দাবির মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসি প্রতিষ্ঠা লাভ করে’ যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার টিএসসিসি কর্তৃক প্রকাশিত ওই স্মরণিকায় ইতিহাস বিকৃত করা চেষ্টা করা হয়েছে। কারণ প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-২০০০ নামে একটি স্মরণিকায় ‘সংস্কৃতির চর্চা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামে ছাত্র শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পেছনে সাংস্কৃতিক কর্মীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের কথা তুলে ধরা হয়।সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীরা এসময় তারা আরও তিনটি দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো, টিএসসিসি নীতিমালা নতুনভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে, অবিলম্বে বিলিকৃত সকল প্রকাশনা ফেরত নিতে হবে ও সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে নতুন করে স্মরণিকা প্রকাশ করতে হবে ও যারা প্রকাশনায় ইতিহাস বিকৃত করেছেন তাদের দুঃখ প্রকাশ করতে হবে।এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সোহেল রানা, সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক শিমুল, সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য আব্দুল মজিদ, রিপন হোসেন প্রমুখ।এদিকে পৃথক এক সংবাদ সম্মেলনে টিএসসিসির নতুন অবকাঠামো নির্মাণের দাবি জানান, রাবি কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক নেতৃবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান প্রশাসনের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, বর্তমান প্রশাসন সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই এমনকি টিএসসিসি পরিচালনা পর্ষদের যে চারজন ছাত্র প্রতিনিধি আছে তাদেরকে অবগত না করেই এই অবকাঠামোটি তড়িঘড়ি করে উদ্বোধন করা হয়। যা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাংস্কৃতিক কার্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্থ করার কৌশলকে সফল করা হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। এসময় তারা ১৯৮৪ সালের নকশায় টিএসসিসি নির্মাণ না হওয়ায় নতুন করে আবারও টিএসসিসি নির্মাণের দাবি জানান।এসময় সংবাদ সম্মেলনে মুঠোফোনে যোগ দিয়ে কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক বলেন, যে উদ্দেশ্য নিয়ে টিএসসিসি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো, বর্তমান অবকাঠামো দিয়ে সে উদ্দেশ্য সফল করা সম্ভব নয়। সুতরাং নতুন করে টিএসসিসি ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন।এসময় সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মলয় ভৌমিক, সুজিত সরকার, এস এম আবু বক্কর, মো আবু নাসের প্রমুখ।১৯৮৪ সালে এক হাজার ৯৮২ বর্গমিটার জায়গায় টিএসসিসি ভবনের অনুমতি পেলেও সেখানে মাত্র ৪শ মিটার জায়গা নিয়ে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সব শেষে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবার কাজ শুরু হয়। গত ২৮ অক্টোবর সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর টিএসসিসির উদ্বোধন করেন।রাশেদ রিন্টু/এমজেড/আরআইপি
Advertisement